প্রবাস বুলেটিন ডেস্ক
মুসলিমদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতরের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হচ্ছে ‘সদকাতুল ফিতর’ বা সংক্ষেপে ‘ফিতরা’। এটি প্রতিটি সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ইসলামের বিধান অনুসারে, ফিতরা প্রদান করতে হয় ঈদ-উল-ফিতরের নামাজের আগে, যাতে সমাজের দরিদ্র মানুষরাও ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে।
ফিতরা নির্ধারণের মূলনীতি
ফিতরার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় পাঁচটি খাদ্যপণ্যের মূল্যকে ভিত্তি করে, যা হলো গম, যব, কিসমিস, খেজুর ও পনির। এই খাদ্যপণ্যের নির্দিষ্ট পরিমাণ অথবা তার সমমানের অর্থমূল্য প্রদান করা যায়।
বাংলাদেশে ২০২৪ সালের ফিতরার হার
বাংলাদেশের ইসলামিক ফাউন্ডেশন চলতি বছর জনপ্রতি সর্বোচ্চ ফিতরা নির্ধারণ করেছে ২,৬৪০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা। বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের ভিত্তিতে ফিতরার হার হলো:
- গম বা আটা: ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম বা ১১৫ টাকা
- যব: ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা ৩৯৬ টাকা
- কিসমিস: ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা ১,৬৫০ টাকা
- খেজুর: ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা ১,৯৮০ টাকা
- পনির: ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা ২,৬৪০ টাকা
প্রত্যেক মুসলমান তার সামর্থ্য অনুযায়ী যেকোনো একটি পণ্য বা তার সমপরিমাণ অর্থ দিয়ে ফিতরা আদায় করতে পারেন।
ফিতরার তাৎপর্য ও গুরুত্ব
ফিতরা প্রদান করার মাধ্যমে রোজার সময় ঘটে যাওয়া ছোটখাটো ভুলত্রুটি পরিশুদ্ধ করা হয় এবং দরিদ্র মানুষের জন্য ঈদ উদযাপনের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এটি একপ্রকার সামাজিক দায়িত্ব, যা ঈদ-উল-ফিতরের আনন্দ সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।
ফিতরা দেয়ার বিধান
ফিতরা দিতে হবে ঈদের নামাজের পূর্বে, অন্যথায় এটি সাধারণ সদকা হিসেবে গণ্য হবে। ইসলামিক বিধান অনুযায়ী, পরিবারের অভিভাবক নিজ ও তার নির্ভরশীল সদস্যদের জন্য ফিতরা প্রদান করবেন।
যাকাত ও ফিতরার পার্থক্য
যাকাত প্রদান নির্ভর করে সম্পদের পরিমাণের ওপর এবং এটি সারা বছর দেওয়া যায়। তবে ফিতরা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ যা ঈদ-উল-ফিতরের পূর্বে প্রদান করতে হয়।
কারা ফিতরা পাবেন?
যারা যাকাত পাওয়ার উপযুক্ত, তারাই ফিতরা গ্রহণ করতে পারেন। মূলত দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তিদের সহায়তা করাই ফিতরার প্রধান উদ্দেশ্য।
ফিতরা প্রদান করে আমরা দরিদ্রদের ঈদের আনন্দে শামিল করার সুযোগ পাই। তাই সময়মতো এবং সঠিক পরিমাণে ফিতরা প্রদান করা সকল সামর্থ্যবান মুসলমানের কর্তব্য।