বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বেড়েই চলেছে এবং এ প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। গত শনিবার স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্স ৬.৮৭ ডলার বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা এবং মূল্যস্ফীতির আশঙ্কার কারণেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ছিল প্রতি আউন্স ২,৯৪৭.৯০ ডলার। গত এক মাসে স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় ৬৩.১৪ ডলার, আর এর মধ্যে মাত্র ৯ দিনে দাম বেড়েছে প্রায় ৫৮ ডলার। এই বৃদ্ধির ফলে স্বর্ণের দাম বিশ্ববাজারে প্রভাব ফেলছে এবং অন্যান্য দেশের বাজারেও তার প্রতিফলন ঘটছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে, আর এর পাল্টা হিসেবে অন্যান্য দেশও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক আরোপ করবে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে, এবং এসব কারণে অনেক বিনিয়োগকারী নিরাপদ সম্পদ হিসেবে স্বর্ণে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন। একাধিক বিনিয়োগকারী শেয়ার বাজার থেকে পুঁজি তুলে স্বর্ণ কেনার দিকে ঝুঁকছেন।
স্বর্ণের দাম শুধু গয়নার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোও স্বর্ণের রিজার্ভ বাড়াচ্ছে। মানুষ এখন স্বর্ণের বার ও স্বর্ণভিত্তিক এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ)-এ বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে।
বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোতে স্বর্ণ কেনা বেড়েছে
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, গত বছরে সারা বিশ্বে মোট ৪,৯৭৪ টন স্বর্ণ বেচাকেনা হয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য তথ্য হলো, বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো স্বর্ণ কেনার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৪ সালে টানা তৃতীয় বছর, বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সম্মিলিতভাবে ১,০০০ টনের বেশি স্বর্ণ কিনেছে। গত বছর সবচেয়ে বেশি স্বর্ণ কিনেছে পোল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যারা কিনেছে ৯০ টন স্বর্ণ।
এভাবে স্বর্ণের দাম এবং তার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধির পেছনে যে মূল কারণগুলো কাজ করছে, তা হলো— বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, মূল্যস্ফীতি এবং শুল্কনীতি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, স্বর্ণ একটি নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে, যেখানে বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীরা নিজেদের পুঁজি নিরাপদ রাখতে চাইছেন।