গত বছরের আগস্টে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে মাঠে নামা হয়নি বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের। নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি দেশে ফিরতে না পারায় ছিটকে পড়েছেন জাতীয় দল থেকেও। তবে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি ঘটেনি—এমনটাই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দেশসেরা এই অলরাউন্ডার।
সম্প্রতি দেশের একটি ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেন, “দেশের হয়ে খেলাই আমার সবচেয়ে বড় ইচ্ছা এবং সে জন্য আমি নিজের সবকিছু দিয়ে দিতে রাজি।” ৩৮ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার জানান, দেশের হয়ে খেলে সুন্দরভাবে ক্যারিয়ারের ইতি টানাই তাঁর স্বপ্ন।
‘শেষ’ নয়, এখনো স্বপ্ন দেখেন সাকিব
সাকিব জানান, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার স্বপ্ন এখনো পুষে রেখেছেন তিনি। “যখন বুঝলাম এত চাপ নিয়ে খেলতে পারব না, তখনই মনে হয়েছে শেষ। কিন্তু আমি আমার দেশের হয়ে খেলতে চাই—এই ইচ্ছা সব সময়ই থাকবে,” বলেন তিনি।
শেষ ম্যাচ, শেষ ঘোষণা
সাকিব সর্বশেষ বাংলাদেশের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টে। সে সফরেই তিনি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেন এবং মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা দেন। তবে ওয়ানডে ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।
রাজনীতি, নিরাপত্তা ও অনুপস্থিতি
সাবেক আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য সাকিব বর্তমানে কোনো রাজনৈতিক পদে নেই। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তার বিষয়টি তাকে দেশে ফেরার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এই প্রসঙ্গে সাকিব বলেন, “তখন বলা হয়েছিল নিরাপত্তার জন্য দেশে না এলেই ভালো হবে।”
তবে তিনি বিসিবির প্রতি কোনো অভিযোগ করেননি। তাঁর মতে, “সবাইকে সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকেই কাজ করতে হয়।”
সুযোগ চান আরও এক-দুই বছরের জন্য
সাকিব বলেন, “আমি মনে করি, বাংলাদেশের হয়ে খেলার সুযোগটা আমার প্রাপ্য এবং বেশির ভাগ মানুষই চায় আমি দেশের হয়ে খেলে অবসর নিই। আমার বিশ্বাস, আরও এক-দুই বছর খেলতে পারব।” তিনি আরও জানান, নিজের প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে তিনি ক্রীড়া উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টা এবং বিসিবি সভাপতির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।
সময়ের হাতে সাকিবের ভবিষ্যৎ
বাংলাদেশের হয়ে ১৯ বছর খেলেছেন সাকিব আল হাসান। এখন প্রশ্ন হলো—দেশের জার্সিতে আরেকবার মাঠে নামার সুযোগ পাবেন কি না? উত্তরের ভার এখন সময়ের হাতে।