নিজস্ব প্রতিবেদক
ডলারের বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা, প্রবাসী আয় ও রপ্তানি খাতকে চাঙা রাখার কৌশলের অংশ হিসেবে দেশের বাজার থেকে আরও ৮৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ রোববার (১০ আগস্ট) অনুষ্ঠিত নিলামে ১২১ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে এই ডলার কেনা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এ পর্যন্ত মোট ৬২২ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়েছে। এর আগে ৭ আগস্ট ১২১.৩৫ থেকে ১২১.৫০ টাকার দরে ৪৫ মিলিয়ন ডলার এবং ২৩ জুলাই ১২১ টাকা ৯৫ পয়সা কাট-অফ দরে ১০ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়—যা হার কমানোর ক্ষেত্রে অন্তত ৪৫ বেসিস পয়েন্ট হ্রাসের ইঙ্গিত দেয়।
ডলারের দর ধরে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ধারাবাহিক হস্তক্ষেপ শুরু হয় ১৩ জুলাই। সেদিন প্রথমবারের মতো নিলামে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে ১৭১ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়। ১৫ জুলাই একই দরে আরও ৩১৩ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিলাম কমিটির এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, ব্যাংকগুলো প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার বিক্রির প্রস্তাব দিলেও বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার কেনা হয়েছে। তিনি বলেন, “ডলারের দর হঠাৎ বৃদ্ধি বা পতন—দুটিই অনুকূল নয়। আমরা রপ্তানিকারক ও রেমিট্যান্স প্রেরকদের সহায়তা করতে বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে পদক্ষেপ নিচ্ছি।”
এক শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ডলার প্রবাহিত হচ্ছে। তার ভাষায়, “প্রতি মাসে গড়ে ২.৫ বিলিয়ন ডলার প্রবাসী আয় এবং ৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে—যা মাসিক প্রবাহকে প্রায় ৬.৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড় করাচ্ছে। অন্যদিকে, বিনিয়োগসংক্রান্ত আমদানি কমে যাওয়ায় মাসিক আমদানি বিল ৪ থেকে ৪.৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। এই অতিরিক্ত প্রবাহ বাজারে ডলারের দর কমাচ্ছে, আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপ সেই পতন ঠেকাচ্ছে।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ স্বল্পমেয়াদে ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে সহায়ক হবে।