প্রকাশিত: ১৯ আগস্ট ২০২৫, মঙ্গলবার
গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধবিরতির সর্বশেষ প্রস্তাব মেনে নিয়েছে হামাস। একই সঙ্গে স্থায়ী যুদ্ধের ইতি টানতে আলোচনায় বসতেও প্রস্তুতি জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী এ সংগঠন। সোমবার এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তারা।
মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিসরকে এ সম্মতি জানানো হয়। ইতোমধ্যে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এবং চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারও এ বার্তা পেয়েছে।
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের মূল শর্তগুলো
-
৬০ দিনের জন্য ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধ থাকবে।
-
এ সময়ে সেনারা অন্যত্র সরে গিয়ে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ করে দেবে।
-
৫০ ইসরায়েলি জিম্মির অর্ধেক মুক্তি দেওয়া হবে।
-
বিনিময়ে মুক্তি দেওয়া হবে ফিলিস্তিনি বন্দীদের।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি কায়রোতে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে বৈঠকের পর হামাসের এই ঘোষণা আসে।
মানবিক বিপর্যয়
২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৬২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। নারী–শিশুসহ অসংখ্য মানুষ বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলের আরোপিত খাদ্য অবরোধে অনেকের মৃত্যু ঘটেছে। বাস্তুচ্যুতির হুমকিও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
ইসরায়েলের অবস্থান
ইসরায়েল গাজা সিটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে আগ্রহী। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সেনাপ্রধানের সঙ্গে এ পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠক করেছেন। তাঁর দাবি, “হামাস ব্যাপক চাপে রয়েছে।”
প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেন, “হামাস জানে আমরা গাজা সিটি দখলে অটল, তাই তারা আলোচনায় রাজি হয়েছে।”
তবে কট্টর দক্ষিণপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ যেকোনো যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করে বলেছেন, “হামাস নিজেদের ধ্বংস হতে দেখছে। আংশিক চুক্তির মাধ্যমে বাঁচতে চাইছে। আমাদের কোনো ছাড় দেওয়া উচিত নয়।”
স্থায়ী শান্তির পথে বাধা
পূর্বের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, হামাস বারবার যুদ্ধবিরতি ও বন্দিমুক্তির প্রস্তাব মেনেছে, কিন্তু ইসরায়েল তা প্রত্যাখ্যান করে হামলা চালিয়ে গেছে। মূল সংকট রয়ে গেছে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ নিয়ে—হামাস স্থায়ী শান্তি চাইলেও ইসরায়েল অস্থায়ী বিরতিতে আগ্রহী, যাতে জিম্মি মুক্তির পর পুনরায় সামরিক অভিযান চালানো যায়।
🔎 উপসংহার:
হামাসের নতুন এ অবস্থান গাজা সংকটে অগ্রগতির ইঙ্গিত দিলেও, দুই পক্ষের ভিন্ন লক্ষ্য ও শর্ত পূরণের জটিলতায় যুদ্ধ শিগগিরই থামবে—এমন নিশ্চয়তা মিলছে না।