প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ঢাকা
যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহ অঙ্গরাজ্যে ডানপন্থী রাজনৈতিক কর্মী ও বিশ্লেষক চার্লি কার্ক (৩১) গুলিতে নিহত হয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত কার্ক গতকাল বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ইউটাহ ভ্যালি ইউনিভার্সিটিতে বক্তব্য দেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। খবর এএফপি ও রয়টার্স।
হামলার ঘটনা
স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে “আমেরিকা কামব্যাক ট্যুর” অনুষ্ঠানে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন কার্ক। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, হঠাৎ একটি গুলির শব্দ শোনা যায় এবং তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। গুলিটি তার ঘাড়ে লাগে। তাৎক্ষণিকভাবে নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে চিকিৎসকরা বাঁচাতে ব্যর্থ হন।
ইউটাহর জননিরাপত্তা বিভাগ জানিয়েছে, এটি ছিল “লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে হামলা।” ধারণা করা হচ্ছে, নিকটবর্তী ভবনের ছাদ থেকে হত্যাকারী গুলি চালিয়েছে। এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। যদিও প্রাথমিকভাবে আটক দুই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
ইউটাহর গভর্নর এ ঘটনাকে “রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ শোক প্রকাশ করে বলেছেন, “এটা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অন্ধকারাচ্ছন্ন একটি মুহূর্ত। চার্লি সত্যের জন্য প্রাণ দিয়েছেন।”
তিনি এ ঘটনার জন্য “কট্টর বামপন্থীদের” বক্তব্য ও উসকানিমূলক কার্যক্রমকে দায়ী করেছেন। চার মিনিটের এক ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, তার প্রশাসন এ ঘটনার পেছনে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবে।
ডেমোক্র্যাট শিবির থেকেও নিন্দা জানানো হয়েছে। সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস বলেছেন, “আমেরিকায় রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো স্থান নেই।”
কার্কের ভূমিকা
চার্লি কার্ক ছিলেন টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা। এটি যুক্তরাষ্ট্রে রক্ষণশীল তরুণদের বৃহত্তম সংগঠন। মাত্র ১৮ বছর বয়সে ২০১২ সালে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের ট্রাম্পের পক্ষে টানতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন কার্ক ও তার সংগঠন।
সামনে কী
যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক সহিংসতা ক্রমবর্ধমান হওয়ায় এ হত্যাকাণ্ড দেশটির নিরাপত্তা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে। তদন্ত চলমান থাকলেও হামলাকারী কে বা কারা—সে বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত তথ্য জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
👉 বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হত্যাকাণ্ড মার্কিন রাজনীতিতে ইতিমধ্যেই বিদ্যমান মেরুকরণ আরও তীব্র করতে পারে।