প্রকাশের তারিখ: ৪ অক্টোবর ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি প্রায় ২০০ আসনে একক প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা তৈরি করছে। এই তালিকায় নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়কে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছেন নারী প্রার্থীরাও।
নির্বাচনী কৌশল
দলীয় সূত্রে জানা যায়, তালিকা তৈরিতে গুরুত্ব পাচ্ছে—
-
প্রার্থীর জনপ্রিয়তা ও ভাবমূর্তি
-
সাংগঠনিক দক্ষতা
-
বিগত আন্দোলনে ভূমিকা
-
শারীরিক সক্ষমতা
চলতি মাসের মাঝামাঝিতে প্রাথমিক তালিকা চূড়ান্ত করে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের অবহিত করা হবে। তফসিল ঘোষণার পর মনোনয়ন বোর্ড ৩০০ আসনে চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করবে।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন,
“কোনো রাজনীতি নবীন-প্রবীণের সংমিশ্রণ ছাড়া চলে না। জনগণের কাছে যাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে এবং যারা ভোট টানতে পারবেন—তাদেরই মনোনয়ন দেওয়া হবে।”
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
আওয়ামী লীগের অধীনে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ২০১৪ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি ও মিত্ররা, তবে ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেয় দলটি। এবার প্রার্থী তালিকা তৈরিতে সেই অভিজ্ঞতা এবং সম্ভাব্য প্রার্থীদের অতীত ভূমিকা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
তরুণ প্রার্থীর উত্থান
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবার প্রায় ৫০-৬০ জন তরুণ প্রার্থী দেখা যেতে পারে। দেশের মোট ভোটারের এক-তৃতীয়াংশ তরুণ হওয়ায় তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে তালিকা করা হচ্ছে। সম্ভাব্য তরুণ প্রার্থীরা ইতিমধ্যে মাঠে সক্রিয় হয়েছেন—
-
দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিভিন্ন মন্দিরে শুভেচ্ছা বিনিময়
-
এলাকায় শোডাউন
-
স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ
অন্যদিকে, প্রবীণ প্রার্থীরা এলাকায় গিয়ে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন এবং সংগঠন শক্তিশালী করার কাজ করছেন।
উল্লেখযোগ্য আসন ও প্রার্থীরা
ঢাকা বিভাগ থেকে শুরু করে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, রংপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ধানের শীষের পক্ষে কাজ করছেন। এর মধ্যে রয়েছেন—
-
ঢাকা-৬: ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন
-
ঢাকা-৩: অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী
-
ঢাকা-২০: ইয়াছিন ফেরদৌস মুরাদ
-
গাজীপুর-২: এম মঞ্জুরুল করিম রনি
-
নারায়ণগঞ্জ-২: নজরুল ইসলাম আজাদ, মাহমুদুর রহমান সুমন
-
চট্টগ্রাম-৭: হুম্মাম কাদের চৌধুরী
-
চট্টগ্রাম-১০: সাঈদ আল নোমান
-
সিলেট-২: হুমায়ুন কবির (যুক্তরাজ্য প্রবাসী)
-
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২: ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা
-
রাজশাহী-৫: মাহমুদা হাবীবা, আবু বকর সিদ্দিক
-
নীলফামারী-৪: বেবী নাজনীন
-
পঞ্চগড়-১: ব্যারিস্টার নওশাদ জমির
এছাড়া ভোলা, পটুয়াখালী, যশোর, ঝিনাইদহ, ময়মনসিংহ, জামালপুরসহ বিভিন্ন জেলায়ও সম্ভাব্য প্রার্থীরা সক্রিয় রয়েছেন।
উপসংহার
বিএনপির কৌশলগত এই প্রাথমিক তালিকা নিয়ে ইতিমধ্যেই দলে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। প্রবীণদের পাশাপাশি তরুণ প্রার্থীদেরও সমান সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তরুণ প্রার্থীদের অন্তর্ভুক্তি আগামী নির্বাচনে বিএনপির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করবে।
