প্রকাশের সময়: রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫ | দুপুর
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রবাস বুলেটিন
রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলারের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে নিচে পড়ে একজন পথচারীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম আবুল কালাম (৩৫), তাঁর বাড়ি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলায়। এ ঘটনায় আজ রবিবার (২৭ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে মেট্রোরেলের সব ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
ঘটনাস্থল ও নিহত ব্যক্তির পরিচয়
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন জানান, ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাডটি খুলে নিচে পড়ে যায় এবং এর নিচে থাকা পথচারী আবুল কালাম ঘটনাস্থলেই মারা যান। নিহতের সঙ্গে থাকা পাসপোর্ট উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত আবুল কালামের স্বজন আরিফ হোসেন জানান, তিনি ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি করতেন এবং পরিবারসহ নারায়ণগঞ্জের পাঠানটুলি এলাকায় বসবাস করতেন। তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে।
মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ
ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো রুটেই মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। কবে ট্রেন চলাচল পুনরায় চালু হবে, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
নিরাপত্তা উদ্বেগ ও পূর্বের ঘটনা
এর আগেও গত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সালে ফার্মগেট এলাকায় একইভাবে একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়েছিল। সেই ঘটনায় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ট্রেন চলাচল ১১ ঘণ্টা বন্ধ ছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের ঘটনা মেট্রোরেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গুরুতর ত্রুটি নির্দেশ করে।
বিয়ারিং প্যাড কী?
মেট্রোরেলের উড়ালপথের পিলারের সঙ্গে রাবারের তৈরি এই বিয়ারিং প্যাডগুলো থাকে। প্রতিটির ওজন প্রায় ১৪০ থেকে ১৫০ কেজি। এগুলো ট্রেনের ভারসাম্য ও উড়ালপথের স্থিতিশীলতা রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিয়ারিং প্যাড নষ্ট বা স্থানচ্যুত হলে উড়ালপথ দেবে যাওয়া বা স্থানচ্যুত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
মরদেহ হাসপাতালে
দুর্ঘটনার পর মরদেহ উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে। সেখানে উপস্থিত নিহতের স্বজনরা শোকাহত অবস্থায় ছিলেন।
উপসংহার:
এক বছরের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ায় প্রকল্পের মান, নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে নাগরিক মহলে।
									 
					