বুধবার, ২০শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৫ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

প্রকাশের তারিখ: ৯ অক্টোবর ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রবাস বুলেটিন

গাজা উপত্যকায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান সংঘাতের অবসানে এক ঐতিহাসিক অগ্রগতি দেখা দিয়েছে। ইসরায়েল ও হামাস যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকালে নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লেখেন,
“ইসরায়েল ও হামাস উভয়ই আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে স্বাক্ষর করেছে। এর অর্থ হলো, খুব শিগগিরই সব জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েল নিজেদের সেনাদের নির্ধারিত একটি লাইনে সরিয়ে আনবে।”


🔹 নেতানিয়াহুর প্রতিক্রিয়া

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই চুক্তিকে “ইসরায়েলের জন্য একটি মহান দিন” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি শান্তি পরিকল্পনার এই ধাপ অনুমোদনের জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সরকারের জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছেন।

অন্যদিকে, হামাসও যুদ্ধবিরতি ও শান্তি চুক্তির বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে একমত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে।


🔹 গাজায় উদযাপন, ইসরায়েলেও স্বস্তি

চুক্তি সইয়ের খবর ছড়িয়ে পড়তেই গাজায় স্বস্তি ও আনন্দের বন্যা দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়—

  • দেইর আল বালাহ শহরে আল-আকসা হাসপাতালের বাইরে শত শত মানুষ সমবেত হয়ে নাচ, শিস আর হাততালিতে উল্লাস করছে।

  • নারী-পুরুষ মিলে “আল্লাহু আকবর” ধ্বনি তুলছেন।

  • গাজার বিভিন্ন স্থানে তরুণদের ছোট ছোট দলকে নাচতে ও সঙ্গীত বাজাতে দেখা যাচ্ছে।

এদিকে, ইসরায়েলেও অনেককে রাস্তায় নেমে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির খবরে স্বস্তি প্রকাশ করতে দেখা গেছে।


🔹 বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়া

এই চুক্তির জন্য বিশ্ব নেতারা যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে বলেন,
“এই দুর্ভোগের অবসান হওয়া উচিত। সব পক্ষকে চুক্তির প্রতিটি শর্ত মেনে চলতে হবে।”

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার বলেন,
“এটি একটি গভীর স্বস্তিকর মুহূর্ত। গাজার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে দুই পক্ষের একমত হওয়া এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেন,
“দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সংঘাত, জিম্মি ও বেসামরিক প্রাণহানির পর এই চুক্তি শান্তির দিকে এক অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।”
তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও মিশর, কাতার এবং তুরস্কের ভূমিকার প্রশংসা করেন।


🔹 পরবর্তী ধাপ

চুক্তির প্রথম পর্যায়ে জিম্মি মুক্তি ও সেনা পুনর্বিন্যাস সম্পন্ন হলে, দ্বিতীয় পর্যায়ে মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি, সীমিত পুনর্গঠন এবং যুদ্ধবিরতি দীর্ঘায়ন নিয়ে আলোচনা হবে বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই চুক্তি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘমেয়াদি শান্তির ভিত্তি স্থাপিত হতে পারে।


শেষ কথা:
দীর্ঘ দুই বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর গাজায় শান্তির প্রথম আলোকরেখা দেখা দিয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বলছে— প্রকৃত শান্তি নির্ভর করবে চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন ও পারস্পরিক আস্থার ওপর।

Leave A Reply

বৈদেশিক কর্মসংস্থান, অভিবাস ও প্রবাস জীবন সংক্রান্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল।

যোগাযোগ

সিটি হার্ট শপিং কমপ্লেক্স (১১তম ফ্লো), রুম ১২/৮, ৬৭, নয়াপল্টন, ভিআইপি রোড, ঢাকা-১০০০, ফোন: +৮৮০ ১৫৩৩-১৯০৩৭১, ইমেইল: info@probashbulletin.com

Exit mobile version