প্রকাশের তারিখ:
শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
জনসমাগমপূর্ণ স্থানে মুখাবয়ব ঢেকে রাখা পোশাক—যেমন বোরকা, নিকাব বা অনুরূপ বস্ত্র—নিষিদ্ধ করে আইন পাস করেছে পর্তুগালের জাতীয় সংসদ অ্যাসেম্বলিয়া দা রিপাবলিকা। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে আইনটি পাস হয়।
আইনটির মূল ধারা ও শাস্তি
নতুন আইনে বলা হয়েছে, দেশের কোনো জনসমাগমপূর্ণ স্থানে নারী বা পুরুষ কেউ এমন কোনো পোশাক পরতে পারবেন না, যা মুখমণ্ডল বা মুখাবয়ব ঢেকে রাখে।
আইন অমান্যকারীদের জন্য জরিমানার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে—
-
সর্বনিম্ন ২০০ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৮,৪৭৬ টাকা)
-
সর্বোচ্চ ৪,০০০ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫,৬৯,৫২০ টাকা)
বিতর্ক ও রাজনৈতিক অবস্থান
এই বিলটি উত্থাপন করেছিল পর্তুগালের কট্টর ডানপন্থি দল চেগা (Chega) পার্টি। বিলটি উত্থাপনের পর থেকে কয়েকদিন ধরে পার্লামেন্টে তীব্র বিতর্ক চলে।
চেগা পার্টির সংসদ সদস্যদের দাবি—
-
পর্তুগালে অনেক নারী ধর্মীয় ও পারিবারিক চাপের কারণে বোরকা পরতে বাধ্য হন।
-
মুখমণ্ডল উন্মুক্ত রাখা পর্তুগালের সামাজিক মূল্যবোধের অংশ।
-
অভিবাসীদের উচিত দেশের সংস্কৃতি ও সামাজিক রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা।
অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলোর মতে—
-
এই আইন বৈষম্যমূলক ও ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিপন্থী।
-
এটি মুসলিম সম্প্রদায়ের নারীদের প্রতি একধরনের সামাজিক চাপ ও বৈষম্য সৃষ্টি করবে।
-
পর্তুগালের সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতা একটি মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত, যা এই আইনে লঙ্ঘিত হয়েছে।
ইউরোপে বোরকা নিষিদ্ধের ধারা
পর্তুগাল ইউরোপের প্রথম দেশ নয়, যারা জনসমাগমপূর্ণ স্থানে বোরকা নিষিদ্ধ করেছে।
এর আগে বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশও অনুরূপ আইন কার্যকর করেছে—
| দেশ | আইন পাসের বছর |
|---|---|
| বেলজিয়াম | ২০১০ |
| ফ্রান্স | ২০১১ |
| নেদারল্যান্ডস | ২০১২ |
| বুলগেরিয়া | ২০১৬ |
| অস্ট্রিয়া | ২০১৭ |
| সুইজারল্যান্ড | ২০২৫ সালের জানুয়ারি |
উপসংহার
পর্তুগালে এই নতুন আইন কার্যকর হওয়ার পর দেশটির মুসলিম সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো কী প্রতিক্রিয়া জানাবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইউরোপে ডানপন্থি রাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এটি “ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর নতুন চাপ” হিসেবে দেখা হতে পারে।
সূত্র: পর্তুগাল ডট কম, রয়টার্স, বিবিসি

