মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫
ভারতের আদানি পাওয়ার লিমিটেড বাংলাদেশকে আলটিমেটাম দিয়েছে—আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে সব বকেয়া পরিশোধ না করা হলে ১১ নভেম্বর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হবে।
প্রতিষ্ঠানটির ভাইস চেয়ারম্যান অবিনাশ অনুরাগ গত ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ সতর্কতা দেন।
চিঠিতে বলা হয়, বিপিডিবি এখনও ৪৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বকেয়া পরিশোধ করেনি, যার মধ্যে ২৬২ মিলিয়ন ডলার বিপিডিবির স্বীকৃত অপরিশোধিত বিল। “যদি ১০ নভেম্বরের মধ্যে সব বকেয়া পরিশোধ না করা হয়, তবে আমরা ১১ নভেম্বর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করতে বাধ্য হব,” চিঠিতে উল্লেখ করেন অবিনাশ অনুরাগ।
আদানি পাওয়ার আরও জানায়, ধারাবাহিক যোগাযোগ ও একাধিক চিঠি পাঠানোর পরও (সর্বশেষ ২৭ অক্টোবরের চিঠিসহ) বিপিডিবি বকেয়া পরিশোধ করেনি। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর স্বাক্ষরিত পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্টের (পিপিএ) ১৩.২(i)(i) ও (ii) ধারার অধীনে সরবরাহ বন্ধের অধিকার রাখে।
তারা আরও জানায়, সরবরাহ বন্ধ থাকলেও ‘ডিপেন্ডেবল ক্যাপাসিটি’-এর ভিত্তিতে তারা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পাওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করবে।
এর আগে, আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি গত ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে ৪৬৪ মিলিয়ন ডলার বকেয়া পরিশোধের আহ্বান জানান।
চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ আংশিক অর্থ পরিশোধ করলেও এখনও বড় অঙ্কের বকেয়া রয়ে গেছে। ২৩ জুন অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিপিডিবি কর্মকর্তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব বকেয়া ও লেট পেমেন্ট সারচার্জ (এলপিএস) পরিশোধ করা হবে, কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি।
তিনি আরও বলেন, “অবিলম্বে পাওনা নিষ্পত্তি না হলে আদানি পাওয়ারের অপারেশন ও অর্থায়ন প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।”
বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে বিপিডিবি সরকার গঠিত ন্যাশনাল রিভিউ কমিটি অন পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্টস (পিপিএ)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছে।
এই কমিটির প্রধান বিচারপতি মইনুল ইসলাম গত ২ নভেম্বর এক বৈঠকে ‘বেসিক গভর্ন্যান্স ফেইলিউর অ্যান্ড রিভিউ অব অ্যানোমালিজ ইন দ্য অ্যাপ্রুভাল প্রসেস অন আদানি’ শিরোনামের প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। চূড়ান্ত প্রতিবেদন আগামী জানুয়ারিতে প্রকাশের কথা রয়েছে।

