সাবেক এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে নিয়ে রেস্তোরাঁয় গোপন বৈঠক: উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগে ১১ পুলিশ বরখাস্ত

প্রকাশিত: শনিবার, কিশোরগঞ্জ থেকে

ছাগল–কাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে আদালতে হাজিরা দিতে নিয়ে যাওয়ার পথে রেস্তোরাঁয় গোপন বৈঠকের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে কিশোরগঞ্জ জেলার ১১ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

ঘটনাপ্রবাহ

• তারিখ: ১২ আগস্ট

• স্থান: নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সৈয়দনগর, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে নিরালা হাড্ডি রেস্তোরাঁ।

• অভিযোগ: পুলিশ সদস্যরা উৎকোচ নিয়ে মতিউর রহমানকে রেস্তোরাঁর কেবিনে অপর এক ব্যক্তির সঙ্গে গোপন বৈঠকের সুযোগ দেন।

• পরিণতি: দায়িত্বে অবহেলা প্রমাণিত হওয়ায় ১১ জনকে বরখাস্ত করে কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

বরখাস্ত পুলিশ সদস্যরা

• এসআই: আবুল কাশেম

• কনস্টেবল (১০ জন): মনিরুজ্জামান, মো. কবির হোসেন, ইমরান, নির্জন খান, শামীম আলম, মো. রনি হোসেন, শরীফুল ইসলাম, তানভীর রহমান, মো. আবু সাইদ মিয়া ও রবীন্দ্র দাস।

তদন্ত ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ

অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পুলিশ সদস্যরা মতিউর রহমানকে কেবিনে বসিয়ে নিজেরা বাইরে সাধারণ স্থানে খাবার গ্রহণ করেন। এটি দায়িত্বে গুরুতর অবহেলার শামিল।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, “বিষয়টি জানার পরপরই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মেলে। ফলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।”

রেস্তোরাঁ মালিকের বক্তব্য

রেস্তোরাঁ মালিক আবুল কাশেম ভূঁইয়া জানান, সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনাটি তার রেস্তোরাঁয় ঘটেছে বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। তিনি ঘটনার সময় নিজেও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

কারা কর্তৃপক্ষের তথ্য

কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার রিতেশ চাকমা জানান, মতিউর রহমানকে গত ১১ এপ্রিল কিশোরগঞ্জ কারাগারে আনা হয়। এর পর থেকে তিনবার তাঁকে ঢাকার আদালতে হাজির করা হয়। সর্বশেষ ১২ আগস্ট তাঁকে হাজির করার পর আবার কিশোরগঞ্জ কারাগারে ফিরিয়ে আনা হয়। তবে ২৬ আগস্ট তাঁকে কাশিমপুর–২ কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।

📌 উল্লেখ্য, ছাগল–কাণ্ডে বিতর্কিত হয়ে ওঠা মতিউর রহমান দুর্নীতির মামলায় বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। পুলিশের এ ধরনের দায়িত্বহীনতা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে সচেতন মহল মনে করছে।