বৃহস্পতিবার, ৬ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২১শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

প্রকাশের তারিখ: ২০ আগস্ট ২০২৫

সিলেটের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর ও জাফলংয়ে পাথর লুটের সমালোচনার মুখে প্রশাসন যখন কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে, ঠিক তখনই জৈন্তাপুর উপজেলার শ্রীপুর সীমান্তসংলগ্ন রাংপানি পর্যটনকেন্দ্রে চলছে ব্যাপক পাথর লুট। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই লুটপাটে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসাধু ব্যক্তি জড়িত।

পাথর লুটের চিত্র

  • কয়েক বছর ধরেই রাংপানিতে চলছে অবৈধ পাথর উত্তোলন।

  • গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে লুটপাট আরও বেড়ে গেছে।

  • শ্রমিকরা সীমান্তের ওপারে গিয়ে পাথর তুলে এনে টিলা কেটে বড় গর্ত তৈরি করছে।

  • বারকি নৌকায় পাথর এনে ভেঙে টুকরো করে পরিবহন করা হচ্ছে।

  • প্রতি ট্রিপে একটি নৌকা থেকে ৮০০ টাকা এবং ট্রাক থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

স্থানীয় তরুণ সংবাদকর্মী রুমান আহমেদ现场ে গিয়ে দেখেন, আট-দশটি নৌকা দিয়ে প্রতিদিন কয়েকশ ট্রিপে পাথর বহন করা হচ্ছে। শ্রমিকরা এ সময় বহিরাগতদের ছবি বা ভিডিও ধারণ করতে চাইলে আক্রমণের হুমকি দেয়।

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ

স্থানীয়দের দাবি, আগে আওয়ামী লীগ নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় পাথর লুট হলেও বর্তমানে বিএনপি ও যুবদলের কয়েকজন নেতা এ লুটপাটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাদের মধ্যে জৈন্তাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল আহাদ, ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক দিলদার হোসেন, সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন এবং জামায়াত নেতা আমির নূরুল ইসলামের নাম উঠে এসেছে।

তবে এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন সংশ্লিষ্ট নেতারা। তাদের দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও আসন্ন নির্বাচনী কারণে তাদের নাম জড়ানো হচ্ছে।

প্রশাসনের অবস্থান ও অভিযান

পরিবেশ কর্মীরা বলছেন, প্রশাসন যদি সাদাপাথরে কঠোর পদক্ষেপ নিত, তাহলে রাংপানি ও অন্যান্য স্পটেও লুটপাট এভাবে চলত না। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক কাসমির রেজা পর্যটন স্পটগুলো রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

এদিকে প্রশাসন বলছে, অভিযান অব্যাহত রয়েছে—

  • মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ২৮ হাজার ঘনফুট বালু এবং ২০ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে।

  • সোমবারের অভিযানে জব্দ হয় ৩৫ ট্রাক বালু এবং ৯ হাজার ৫০০ ঘনফুট পাথর

জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জর্জ মিত্র চাকমা বলেন, “প্রশাসনের নামে ফায়দা লুটতে কেউ যেন না পারে সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা একাধিকবার অভিযান চালিয়েছি, অভিযান চলমান থাকবে।”

জৈন্তাপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তার লাবনী জানান, জব্দ করা পাথর নদীতে পুনঃস্থাপন করা হবে এবং ক্র্যাশার মালিকদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হচ্ছে।

সমাপনী মন্তব্য

রাংপানির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এখন লুটেরাদের থাবায় বিপন্ন। প্রশাসন নিয়মিত অভিযান চালালেও স্থানীয়দের দাবি, কঠোর পদক্ষেপ ও সামাজিক সচেতনতা ছাড়া এ লুটপাট বন্ধ হবে না।

Leave A Reply

বৈদেশিক কর্মসংস্থান, অভিবাস ও প্রবাস জীবন সংক্রান্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল।

যোগাযোগ

সিটি হার্ট শপিং কমপ্লেক্স (১১তম ফ্লো), রুম ১২/৮, ৬৭, নয়াপল্টন, ভিআইপি রোড, ঢাকা-১০০০, ফোন: +৮৮০ ১৫৩৩-১৯০৩৭১, ইমেইল: info@probashbulletin.com

Exit mobile version