বাউল আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনে হামলা: খুলনায় ছাত্রজোটের কয়েকজন আহত

তারিখ: বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার | প্রবাস বুলেটিন

বাউল আবুল সরকারের মুক্তির দাবি এবং দেশজুড়ে মাজার–দরগাহ ভাঙচুরের প্রতিবাদে খুলনায় গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের আয়োজন করা মানববন্ধনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বিকেলে খুলনা শহরের শিববাড়ী মোড়ে এ হামলায় সংগঠনের বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হন। হামলাকারীরা মানববন্ধনের ব্যানার ছিঁড়ে আগুনও ধরিয়ে দেয়।

ঘটনার বিবরণ

প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটের দিকে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট মানববন্ধনের ঘোষণা দেয়। একই সময়ে ‘ছাত্র–জনতা’ ব্যানারে আরেকটি দল একই স্থানে জমায়েত হয়। বিকেল ৫টার পর ছাত্রজোট ব্যানার হাতে সড়কে নামলে পাল্টা পক্ষ তাদের ওপর চড়াও হয়। কিল–ঘুষি ও লাঠির আঘাতে কয়েকজন আহত হন।

হামলাকারীরা ছাত্রজোটের ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে সেটিতে আগুন দেয়।

ছাত্রজোটের অভিযোগ

ছাত্র ইউনিয়নের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সজীব খান অভিযোগ করেন,

“পুলিশ উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। ‘ছাত্র–জনতা’ নামে যারা এসেছিল, তারা মূলত আপ বাংলাদেশ ও শিবিরের কর্মী।”

তিনি দাবি করেন, তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলেন, কিন্তু পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে।

অপর পক্ষের বক্তব্য

আপ বাংলাদেশের খুলনা মহানগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়জুল্লাহ শাকিল পাল্টা অভিযোগ করেন,

“ওরা আগে আমাদের একজন কর্মীকে মারধর করে। পরে সবাই মিলে ওদের দিকে এগিয়ে যাই।”

দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছে।

পুলিশের অবস্থান

সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ওসি কবির হোসেন বলেন,

• ‘বামপন্থী ছাত্রদের মানববন্ধনে ছাত্র ও সাধারণ জনতার অংশগ্রহণে হামলার ঘটনা ঘটে।’

• কয়েকজন আহত হলেও কেউ গুরুতর নয়।

• ব্যানার পোড়ানোর ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

• উত্তেজনা এড়াতে আগেই পুলিশ মোতায়েন ছিল।

পুলিশ পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনে এবং সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানায়।

প্রেক্ষাপট

সম্প্রতি বাউলশিল্পীদের ওপর হামলা, বিভিন্ন এলাকার মাজার–দরগাহ ভাঙচুর এবং ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নিয়ে দেশজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এর প্রতিবাদে বাউল আবুল সরকারের মুক্তি দাবি করে বিভিন্ন জেলায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ঠাকুরগাঁওতেও গতকাল অনুরূপ মানববন্ধনের প্রস্তুতিকালে হামলার ঘটনা ঘটে।

উপসংহার

খুলনার এই হামলার ঘটনা ধর্মীয় সহনশীলতা ও সাংস্কৃতিক নিরাপত্তা নিয়ে চলমান উত্তেজনাকে আবার সামনে নিয়ে এসেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তবে কোনো পক্ষই এখনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দেয়নি।