প্রকাশিত: রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেটি হবে জাতির নবজন্মের মহোৎসব। তিনি বলেছেন, এই নির্বাচন কেবল একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়, বরং এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন সূচনার দ্বার উন্মোচন করবে।
আজ রবিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চলমান সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
ঐকমত্য কমিশনের অভূতপূর্ব ভূমিকা
ড. ইউনূস বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যের যে অগ্রগতি অর্জন করেছে, তা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বিশ্বের জন্যও এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, “শুরুতে আমি নিশ্চিত ছিলাম না এই কমিশন টিকে থাকবে কি না। কিন্তু আজ দীর্ঘ পথ অতিক্রমের পর আপনাদের সিদ্ধান্তে আমি অভিভূত হয়েছি। অন্য দেশগুলোও ভবিষ্যতে এ অভিজ্ঞতা অনুসরণ করবে।”
নির্বাচন হবে নবজন্মের প্রতীক
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা বারবার বলেছি—ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই নির্বাচন হবে। সেটি হবে মহোৎসবের নির্বাচন, ঐক্যমতের মাধ্যমে ফয়সালা করা একটি নবজন্ম। এত রক্ত ও ত্যাগ তখনই সার্থক হবে, যদি আমরা এই নবজন্ম অর্জন করতে পারি।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, বিভাজন বা দ্বিমতের কোনো স্থান নেই। “যখন ঐকমত্যে পৌঁছাব, তখনই নির্বাচন সার্থক হবে।”
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান নতুন পথ দেখিয়েছে
অধ্যাপক ইউনূস উদাহরণ টেনে বলেন, “আমাদের হাতে এখন আলাদিনের প্রদীপের মতো সুযোগ এসেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সেই শক্তি এনে দিয়েছে। এই সুযোগ একবারই এসেছে, আর আসবে না। আমরা চাইলে ছোটখাটো পরিবর্তন চাইতে পারি, আবার চাইলে পুরো জাতিকে নতুনভাবে গড়তে পারি।”
স্বৈরাচার রুখতে সংস্কার
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সংস্কারের মূল লক্ষ্য হলো সব পথঘাট বন্ধ করা, যাতে কোনো স্বৈরাচার আর ফিরে আসতে না পারে। এজন্য সবাইকে একমত হতে হবে।”
শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আহ্বান
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা হাইওয়ে বানিয়ে ফেলেছি, এখন শুধু সাইনবোর্ড বসানো বাকি। পথ ঠিক আছে, গন্তব্য পরিষ্কার। এই নির্বাচন হবে উৎসবের নির্বাচন, দেশের শান্তি ও নতুন যাত্রার সূচনা।”
নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি
সংলাপে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য গঠন) মনির হায়দার।