প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সোমবার
নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যুতে জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র মধ্যে যে ঐকমত্যের আভাস মিলছিল, তাতে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে। সাম্প্রতিক কয়েকটি ইস্যুতে মতপার্থক্যের কারণে দুই দলের মধ্যে দৃশ্যমান দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় জামায়াত ঘোষিত যুগপৎ আন্দোলনে যোগ দেয়নি এনসিপি।
আলাদা কর্মসূচি ঘোষণা
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) পৃথক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন পাঁচ দফা দাবি এবং খেলাফত মজলিস ছয় দফা দাবি উত্থাপন করে। এ দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
-
সনদ বাস্তবায়ন
-
পিআর ব্যবস্থা
-
গণহত্যার বিচার
-
নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ
-
জাতীয় পার্টির কার্যক্রম নিষিদ্ধকরণ
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায়, ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় শহরে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। তবে এই কর্মসূচিতে ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিসসহ চারটি দল থাকলেও শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়িয়েছে এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ এবং এবি পার্টি।
মতপার্থক্যের কারণ
এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে, নির্বাচন সংস্কারসহ একাধিক ইস্যুতে দলটির ভেতরে এখন দুইটি স্পষ্ট ধারা তৈরি হয়েছে। এ কারণে আপাতত জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনি সমঝোতা বা যুগপৎ আন্দোলনে যেতে দ্বিধায় রয়েছে এনসিপি।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন,
“সংস্কারের সব দাবিতে একমত না হওয়া ও নির্বাচনি জোট হওয়া নিয়ে নানা অস্পষ্টতা থাকায় আপাতত জামায়াতের সাথে জোটবদ্ধতা নিয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি এনসিপি।”
বিশ্লেষকদের মত
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এনসিপি আপাতত কৌশলী অবস্থান নিয়েছে। এই দূরত্ব সাময়িক হলেও নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলে তাদের অবস্থানে পরিবর্তন আসতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক রাশেদা রওনক খান বলেন,
“লক্ষ্যের জায়গা এক ছিল, কিন্তু লক্ষ্য অর্জনের পর বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় হলে তখন স্বাভাবিকভাবেই দূরত্ব তৈরি হয়।”
তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা