শুক্রবার, ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

প্রবাস বুলেটিন ডেস্ক | ২৪ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে চলমান ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় একসঙ্গে দুই কিস্তিতে ১৩০ কোটি ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী ২৬ জুন এই অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে জমা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর

আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার (রিভিউ) প্রতিবেদন উপস্থাপন ও অনুমোদনের পর এই অর্থ ছাড়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকটি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ সময় সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত হয়।

ঋণ কর্মসূচির পটভূমি

২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশকে সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ কর্মসূচির অনুমোদন দেয়। এর আওতায় তিনটি পৃথক ধাপে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে:

  • ইসিএফ ও ইএফএফ (Extended Credit Facility & Extended Fund Facility): ৩৩০ কোটি ডলার

  • আরএসএফ (Resilience and Sustainability Facility): ১৪০ কোটি ডলার

উল্লেখযোগ্যভাবে, আরএসএফ তহবিল থেকে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ছিল এশিয়ার প্রথম দেশ।

এখন পর্যন্ত কত টাকা পেল বাংলাদেশ?

কিস্তি অর্থ (মিলিয়ন ডলার) সময়কাল
১ম কিস্তি ৪৭৬.৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
২য় কিস্তি ৬৮১.০ ডিসেম্বর ২০২৩
৩য় কিস্তি ১,১৫০ জুন ২০২৪
৪র্থ + ৫ম কিস্তি ১,৩০০ জুন ২০২৫

এই কিস্তি ছাড়ের পর পর্যন্ত বাংলাদেশ মোট ৩৬১ কোটি ডলার পেয়ে যাবে। বাকি থাকবে ১২৯ কোটি ডলার, যা বাকি দুই কিস্তিতে ছাড় করা হবে।

কেন এত দেরি হলো?

মূলত জলবায়ুজনিত কারণে গত বছরের ডিসেম্বরের আইএমএফ বোর্ড মিটিং বাতিল হয়। পরে ফেব্রুয়ারি ও মার্চেও সিদ্ধান্ত হয়নি। বাংলাদেশ ও আইএমএফের মধ্যে মুদ্রা বিনিময় হারে মতানৈক্য তৈরি হয়। আইএমএফ বাজারভিত্তিক বিনিময় হার দাবি করলেও বাংলাদেশ শুরুতে অনাগ্রহী ছিল।

শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী বাজারভিত্তিক বিনিময়হার চালু করে। এরপরই গত ১৪ মে আইএমএফ জানায়, জুন মাসেই অর্থ ছাড় করা হবে।

বিশ্লেষকের মতামত

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, “একসঙ্গে দুই কিস্তির অর্থ ছাড় রিজার্ভের ওপর তাৎক্ষণিক ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তবে ভবিষ্যতে জ্বালানি খাতে ভর্তুকি হ্রাস, ব্যাংক খাত সংস্কার ও রাজস্ব আহরণে উন্নতি ঘটাতে না পারলে আইএমএফের পরবর্তী কিস্তি পাওয়া কঠিন হবে।”

ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ

আইএমএফ পরবর্তী কিস্তির জন্য বাংলাদেশকে যে বিষয়গুলোতে অগ্রগতি দেখাতে হবে, তা হলো:

  1. জ্বালানি খাতে ভর্তুকি হ্রাস

  2. ব্যাংক খাতের স্বচ্ছতা ও পুনঃগঠন

  3. ট্যাক্স নেট ও রাজস্ব আহরণে প্রবৃদ্ধি

  4. মুদ্রানীতির স্বাধীনতা ও ডেটা স্বচ্ছতা

বাংলাদেশের পক্ষে এই ঋণ কর্মসূচি সফলভাবে শেষ করতে হলে শুধু অর্থ ছাড় নয়, বরং কাঠামোগত সংস্কার ও টেকসই আর্থিক নীতির বাস্তবায়নকেও গুরুত্ব দিতে হবে।

সূত্র: অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, আইএমএফ, প্রথম আলো

Leave A Reply

বৈদেশিক কর্মসংস্থান, অভিবাস ও প্রবাস জীবন সংক্রান্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল।

যোগাযোগ

সিটি হার্ট শপিং কমপ্লেক্স (১১তম ফ্লো), রুম ১২/৮, ৬৭, নয়াপল্টন, ভিআইপি রোড, ঢাকা-১০০০, ফোন: +৮৮০ ১৫৩৩-১৯০৩৭১, ইমেইল: info@probashbulletin.com

Exit mobile version