প্রকাশিত: ১০ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
ওপেনএআই-এর প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যান বলেছেন, মানবসভ্যতা ইতিমধ্যে সেই সীমারেখা অতিক্রম করেছে, যেখান থেকে আর ফেরার সুযোগ নেই—ডিজিটাল সুপারইন্টেলিজেন্স তৈরির যাত্রা শুরু হয়ে গেছে। তার মতে, ২০৩০-এর দশকে বিশ্বে আইডিয়া তৈরির ক্ষমতা ও তা বাস্তবায়নের সামর্থ্য হবে অগ্রগতির মূল চালিকা শক্তি।
বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
অল্টম্যান বলেন, এখনো রাস্তায় রোবট হাঁটতে শুরু করেনি, কিংবা মানুষ সহজে মহাকাশ ভ্রমণ করতে পারছে না, তবে এমন প্রযুক্তি ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে যা বহু ক্ষেত্রে মানুষের চেয়ে বেশি বুদ্ধিমান। এসব প্রযুক্তি ব্যবহারকারীর সক্ষমতা বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে এবং বিজ্ঞানের গতি ত্বরান্বিত করবে।
তার মতে—
-
২০২৫ সালে এআই এজেন্টরা ইতিমধ্যেই জটিল ও চিন্তাশীল কাজ করতে পারছে, বিশেষ করে কোড লেখা।
-
২০২৬ সালে এআই নতুন আবিষ্কার বা সৃজনশীল চিন্তা করতে সক্ষম হবে।
-
২০২৭ সালে বাস্তব জগতে মানুষের মতো কাজ করতে সক্ষম রোবট আসতে পারে।
-
২০৩০ সালে একজন ব্যক্তি একাই বহু মানুষের সমান উৎপাদনশীলতা অর্জন করতে পারবেন।
এআইয়ের প্রভাব
অল্টম্যান উল্লেখ করেন, এআই শুধু কাজের উৎপাদনশীলতাই বাড়াবে না, বরং বিজ্ঞানের গবেষণার গতি বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে। এক দশকের সমপরিমাণ গবেষণা ভবিষ্যতে এক মাস বা এমনকি কয়েক সপ্তাহেই সম্পন্ন হতে পারে। এ প্রক্রিয়াকে তিনি ‘আত্মোন্নয়নের প্রাথমিক ধাপ’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
তিনি সতর্ক করেন, এআইয়ের সামান্য ইতিবাচক উন্নতি কোটি মানুষের উপকারে আসতে পারে, আবার সামান্য ভুলও বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রযুক্তি ও সমাজে পরিবর্তন
অল্টম্যানের মতে, প্রযুক্তি যত দ্রুত অগ্রসর হবে, সমাজও তত দ্রুত মানিয়ে নেবে। অনেক প্রচলিত চাকরি বিলুপ্ত হবে, তবে নতুন সামাজিক নীতি ও সুযোগ তৈরি হবে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, বিপুলসংখ্যক হিউম্যানয়েড রোবট তৈরি হলে তারা নিজেরাই উৎপাদন ও সাপ্লাই চেইন পরিচালনা করতে পারবে, ফলে প্রযুক্তি উন্নয়নের গতি নাটকীয়ভাবে বাড়বে।
আইডিয়ার গুরুত্ব
ভবিষ্যতে প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য সবচেয়ে জরুরি হবে ভালো আইডিয়া। আগে স্টার্টআপ দুনিয়ায় শুধু আইডিয়া থাকা লোকজনকে অবজ্ঞা করা হলেও, অল্টম্যান মনে করেন—এখন তাদের সময় এসে গেছে।
সমাপনী মন্তব্য
স্যাম অল্টম্যানের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, ২০৩০-এর দশক হবে মানব ইতিহাসে এক বিশেষ অধ্যায়, যেখানে অফুরন্ত বুদ্ধিমত্তা, প্রযুক্তিগত শক্তি এবং সৃজনশীলতা মিলিয়ে বিশ্ব দ্রুত বদলে যাবে। তবে এই যাত্রা যেন শান্তিপূর্ণ ও মানবকল্যাণে হয়, সে আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।