প্রকাশের তারিখ:
২০ অক্টোবর ২০২৫, সোমবার
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রবাস বুলেটিন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইন হত্যা মামলায় নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা জানিয়েছেন, তার সাবেক প্রেমিক মাহির রহমানের প্রেমঘটিত জটিলতার জেরেই জোবায়েদ খুন হন।
তবে খুনের পরিকল্পনা বা বাস্তবায়ন সম্পর্কে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন বর্ষা।
🕵️♂️ প্রেম থেকে শুরু রক্তাক্ত পরিণতি
সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, বর্ষা ও মাহিরের ৯ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তারা ছোটবেলা থেকেই পাশাপাশি বাড়িতে বড় হয়েছেন। কিন্তু সম্প্রতি তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরলে বিষয়টি জটিল আকার নেয়।
ওসি বলেন,
“সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর বর্ষা তার সাবেক প্রেমিক মাহিরকে জানান যে, তিনি জোবায়েদকে পছন্দ করেন, যদিও সরাসরি কিছু বলেননি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাহির তার এক বন্ধুকে নিয়ে জোবায়েদকে খুন করেন।”
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত জোবায়েদ ও বর্ষার মধ্যে কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। বরং জোবায়েদ গত এক বছর ধরে পুরান ঢাকার আরমানিটোলার ১৫, নুরবক্স লেনে বর্ষাকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান পড়াতেন।
🩸 হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত
রোববার বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে ওই বাসার তৃতীয় তলায় জোবায়েদকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। ঘটনাস্থলে সিঁড়ি ও বারান্দাজুড়ে রক্তের দাগ পাওয়া যায়।
ওসি রফিকুল ইসলাম আরও বলেন,
“জিজ্ঞাসাবাদের সময় বর্ষার মুখে কোনো অনুশোচনা বা ভয় দেখা যায়নি। তিনি পুরো সময় শান্ত ছিলেন। তদন্ত চলছে, ঘটনার পেছনের সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
খুনের পরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা বংশাল থানার সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং তাঁতিবাজার মোড় অবরোধ করে রাখেন। পরে রাত ১১টার দিকে বর্ষাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়।
⚖️ তদন্ত ও আইনগত অগ্রগতি
রাত ১০টা ৫০ মিনিটে নিহত জোবায়েদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার ১৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও মামলা হয়নি।
ওসি জানান,
“মূল অভিযুক্ত মাহির রহমান ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।”
🧑🎓 নিহতের পরিচয়
নিহত জোবায়েদ হোসাইন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। পাশাপাশি তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন।
📍 সারসংক্ষেপ:
- 
খুনের পেছনে প্রেমঘটিত জটিলতা ও প্রতিহিংসা।
 - 
অভিযুক্ত বর্ষা দাবি করেছেন, তিনি খুনের পরিকল্পনা জানতেন না।
 - 
মূল অভিযুক্ত মাহির রহমান ও সহযোগীরা পলাতক।
 - 
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তপ্ত পুরান ঢাকা।
 
— প্রবাস বুলেটিন সংবাদ ডেস্ক
									 
					