প্রকাশের সময়: সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫ | সকাল
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রবাস বুলেটিন
রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারী নিহত হওয়ার পর আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত শাহবাগ থেকে আগারগাঁও অংশে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো অফিসগামী মানুষ। সকাল ১১টার পর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পূর্ণ রুটে মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক হয়, তবে তার আগ পর্যন্ত চলেছে ব্যাপক দুর্ভোগ।
অফিসগামীদের দুর্ভোগ চরমে
মিরপুরের শেওড়াপাড়া থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা আতিকুর রহমান প্রায় ৪০ মিনিট ধরে আগারগাঁও বাসস্টেশনে দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো যানবাহন পাননি। হতাশ কণ্ঠে তিনি বলেন,
“পাবলিক ট্রান্সপোর্ট নেই। অতিরিক্ত ভাড়া দিতে চাইলাম, তার পরও সিএনজি যেতে রাজি হলো না। অফিসে ঢোকার সময় পেরিয়ে গেছে। হয়তো আজ ছুটি নিতে হবে।”
রোদের মধ্যে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে
সকালে আগারগাঁও এলাকায় দেখা যায়, বিপাকে পড়া অসংখ্য মানুষ রোদের মধ্যে হেঁটে চলেছেন গন্তব্যের দিকে। কেউ কেউ ভ্যানে বা মালবাহী পিকআপে চড়ে বসেন। মেট্রোরেল বন্ধ থাকায় বাস ও অটোরিকশার সংখ্যা যাত্রীচাহিদার তুলনায় ছিল অনেক কম। ফলে বেশির ভাগ মানুষই দীর্ঘ অপেক্ষার পরও যানবাহন পাননি।
‘রাস্তায় জ্যাম এড়াতে মেট্রোরেলে উঠেছিলাম’
সাভার থেকে উত্তরায় গিয়ে সেখান থেকে মেট্রোরেলে আগারগাঁও পর্যন্ত আসেন হাইকোর্টগামী যাত্রী সাইদুল ইসলাম। তিনি বলেন,
“রাস্তায় জ্যাম হবে ভেবে মেট্রোরেলেই উঠেছিলাম। আগারগাঁও থেকে প্রেস ক্লাবে যাওয়ার কথা ছিল। এখন তো কোনো উপায়ই নেই—না বাস, না সিএনজি।”
নারী যাত্রীদের দুর্ভোগও কম নয়
আরেক যাত্রী সাহিদা খাতুন (ছদ্মনাম) আগারগাঁও থেকে ফার্মগেট যাচ্ছিলেন। এক ঘণ্টারও বেশি সময় অপেক্ষার পরও কোনো যানবাহন পাননি তিনি। বলেন,
“মিরপুর থেকে আসা বাসগুলো ভর্তি। উঠতে পারছি না। অ্যাপে বাইক ডাকার চেষ্টা করছি, কিন্তু সেটাও পাওয়া যাচ্ছে না।”
মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
সকাল থেকে চলমান এই দুর্ভোগের অবসান ঘটে সকাল ১১টার পর, যখন ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো পথে মেট্রোরেল চলাচল চালুর ঘোষণা দেয়।
পটভূমি
গতকাল রোববার ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে নিচে পড়ে এক পথচারীর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার পর নিরাপত্তার স্বার্থে আংশিকভাবে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
উপসংহার:
একটি দুর্ঘটনার পরদিন রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবস্থার উপর চাপ বাড়ায় সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতি মেট্রোরেলের ওপর জনগণের নির্ভরতা কতটা বেড়েছে তা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে, এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই এই সেবাটি নিয়মিত রাখতে হবে।

