প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি দক্ষ কর্মী আনার নিয়মে বড় পরিবর্তন আনল ট্রাম্প প্রশাসন। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, এখন থেকে এইচ–১বি ভিসায় প্রতি বছর ১ লাখ মার্কিন ডলার ফি দিতে হবে প্রতিষ্ঠানগুলোকে। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে এ সিদ্ধান্তে সই করেছেন।
মূল পয়েন্টসমূহ
-
প্রতি বছর ১ লাখ ডলার ফি বাধ্যতামূলক করা হলো এইচ–১বি ভিসায়।
-
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি খাত, বিশেষ করে ভারতীয় ও চীনা কর্মী নির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলো।
-
ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, বিদেশিদের কারণে মার্কিন কর্মীরা চাকরি হারাচ্ছেন এবং মজুরি কম পাচ্ছেন।
-
সমর্থক ও সমালোচকরা উভয়েই নীতিটি নিয়ে তীব্র বিতর্কে জড়িয়েছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান
ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারের সময় থেকেই অভিবাসন দমনের অঙ্গীকার করেছিলেন। অবৈধ অভিবাসন ঠেকানোর পাশাপাশি বৈধ অভিবাসনকেও সীমিত করার কৌশল নিচ্ছে তাঁর প্রশাসন।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক বলেন:
“আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা তরুণদের প্রশিক্ষণ দিন। বিদেশিদের এনে মার্কিনদের চাকরি কেড়ে নেওয়া বন্ধ করুন।”
প্রযুক্তি খাতে উদ্বেগ
এইচ–১বি ভিসায় দক্ষ কর্মীদের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি খাত প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ধরে রেখেছে। সমর্থকদের মতে, এ নীতি যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিভা আকৃষ্ট করার দৌড়ে পিছিয়ে দেবে।
ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট ডিডি দাস সতর্ক করেছেন:
“যদি যুক্তরাষ্ট্র সেরা প্রতিভাধরদের আকৃষ্ট করা বন্ধ করে, তবে উদ্ভাবন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি নাটকীয়ভাবে হ্রাস পাবে।”
এদিকে টেসলার সিইও ইলন মাস্কও এইচ–১বি ভিসার পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি নিজেও একসময় এই ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেছিলেন।
বিশ্লেষকদের মন্তব্য
-
নতুন নীতির ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোটি কোটি ডলার অতিরিক্ত খরচ করতে হবে।
-
ছোট প্রতিষ্ঠান ও স্টার্টআপগুলো সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বে।
-
চীনের সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে পড়তে পারে।
ইমার্কেটার বিশ্লেষক জেরেমি গোল্ডম্যান বলেন,
“এই পদক্ষেপ স্বল্পমেয়াদে ওয়াশিংটনকে বড় অঙ্কে অর্থ এনে দেবে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র তার উদ্ভাবনী সক্ষমতা হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে।”
ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা
ভিসা ফি কীভাবে কার্যকর হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে বাণিজ্যমন্ত্রী লুটনিক জানিয়েছেন, প্রতিবার তিন বছর মেয়াদি ভিসার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিবছর ১ লাখ ডলার দিতে হবে।
এ নিয়ে এখনো প্রযুক্তি খাতের ভেতরে-বাইরে তীব্র বিতর্ক চলছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অনেকাংশে পিছিয়ে যেতে পারে।