প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ঢাকা
ফরাসি উপকূল থেকে ছোট নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পথে ভয়াবহ ট্র্যাজেডি ঘটেছে। তিনটি পৃথক ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন দুই নারীসহ চার অভিবাসী, আর নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত তিনজন।
যুক্তরাজ্যের উপকূলে দুর্ঘটনা
মঙ্গলবার দুপুরে খাবারের সময় ইংলিশ চ্যানেলে বিপদগ্রস্ত একটি নৌকার খবর পায় ব্রিটিশ বর্ডার ফোর্স। উদ্ধারে গিয়ে তারা এক নারী অভিবাসীকে অচেতন অবস্থায় পান। তাকে সিপিআর দেওয়া হলেও পরে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করে বলেন, “এই মর্মান্তিক ঘটনায় আমরা হতবাক ও দুঃখিত। ছোট নৌকায় চ্যানেল পাড়ি কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, তা আবারও প্রমাণিত হলো।”
ফ্রান্সে দুই পৃথক দুর্ঘটনা
ফরাসি কর্মকর্তারা বুধবার সকালে জানান, পা-দ্য-কালে অঞ্চলে নৌকাডুবির দুটি ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন এক নারী ও দুইজন পুরুষ অভিবাসী। তারা বয়সে তরুণ ছিলেন এবং নৌকার নিচে চাপা পড়ে মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বুলোন-সুর-মের বন্দরে উদ্ধার অভিযান শেষে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় এখনো তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন। প্রসিকিউটর সেসিল গ্রেসিয়ে জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে।
অতিরিক্ত ঝুঁকি ও হতাহতের সংখ্যা
মঙ্গলবার রাতে যুক্তরাজ্যমুখী আরেকটি নৌকা থেকে চারজন অভিবাসী সমুদ্রে পড়ে যান। তাদের মধ্যে একজনকে উদ্ধার করা হলেও নিখোঁজ হয়েছেন তিনজন।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির তথ্য অনুযায়ী, এ সপ্তাহের ঘটনায় নিহত চারজনসহ চলতি বছরে ইংলিশ চ্যানেলে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৩ জন অভিবাসী।
রাজনৈতিক চাপ ও নীতি পরিবর্তন
বিশ্বের ব্যস্ততম শিপিং লেন ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে এ বছর ইতিমধ্যেই ৩০ হাজারের বেশি অভিবাসী যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। আগস্টে প্রবাহ কমলেও সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আবার বেড়েছে।
এ নিয়ে ব্রিটিশ সরকার তীব্র চাপে রয়েছে। আশ্রয়প্রার্থীদের হোটেলে রাখার বিরোধিতা করে দেশজুড়ে বিক্ষোভ হয়েছে, যা অতি-ডানপন্থি ও অভিবাসনবিরোধী রাজনীতির জনপ্রিয়তা বাড়াচ্ছে।
নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, “যুক্তরাজ্যের সীমান্ত রক্ষা করা হবে আমার অগ্রাধিকার।” তিনি সতর্ক করেছেন, অনিয়মিত অভিবাসীদের ফেরত নিতে অস্বীকৃতি জানালে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ভিসা নীতি কঠোর করা হবে।
এদিকে, ফ্রান্সের সঙ্গে করা ‘ওয়ান ইন ওয়ান আউট’ চুক্তির আওতায় ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে আসা অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো প্রক্রিয়া শিগগিরই শুরু হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।