প্রকাশের তারিখ: বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫
ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যদি তার সঙ্গে সরাসরি বৈঠকে রাজি না হন, তবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে তিনি ‘কড়া প্রতিক্রিয়া’ প্রত্যাশা করেন। বুধবার (২০ আগস্ট) কিইভে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
শান্তি প্রচেষ্টায় ট্রাম্পের ভূমিকা
-
যুদ্ধরত ইউক্রেইন ও রাশিয়ার মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার মধ্যস্থতায় সক্রিয় রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
-
গত শুক্রবার আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে এবং সোমবার ওয়াশিংটনে জেলেনস্কি ও সাত ইউরোপীয় নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি।
-
বৈঠকের পর ট্রাম্প জানান, শান্তির জন্য পুতিন-জেলেনস্কির সরাসরি বৈঠক জরুরি এবং প্রয়োজনে তিনি নিজেও সেখানে উপস্থিত থাকবেন।
রাশিয়ার অবস্থান
যদিও জেলেনস্কি প্রস্তাবে তাৎক্ষণিক সাড়া দিয়েছেন, তবে ক্রেমলিনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মন্তব্যে বোঝা যাচ্ছে, রাশিয়া বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। ট্রাম্পও জানিয়েছেন, “পুতিন চুক্তি করতে আগ্রহী নাও হতে পারেন।”
জেলেনস্কির বক্তব্য
-
“আমরা প্রস্তুত। কিন্তু রুশরা যদি প্রস্তুত না থাকে তাহলে কী হবে?” — প্রশ্ন রাখেন জেলেনস্কি।
-
তিনি বলেন, “রুশরা যদি প্রস্তুত না থাকে, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে একটি কড়া প্রতিক্রিয়া দেখতে চাইবো।”
-
ইউক্রেইন কী ছাড় দিতে পারে তার আগে রাশিয়া কী ছাড় দিতে প্রস্তুত, সেটিই আগে পরিষ্কার হওয়া জরুরি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সম্ভাব্য সমঝোতার খসড়া
মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, সাম্প্রতিক পুতিন-ট্রাম্প বৈঠকে রাশিয়া ‘ভূমি বিনিময়ের’ প্রস্তাব দেয়।
-
রাশিয়া বর্তমানে দখল করা অবস্থানেই থামবে।
-
বিনিময়ে পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক থেকে কিইভ সেনা প্রত্যাহার করবে।
-
সুমি ও খারকিভের ছোট ছোট দখলকৃত এলাকা ইউক্রেইনের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
তবে মস্কো কিংবা ওয়াশিংটন আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রস্তাব নিশ্চিত করেনি।
সম্ভাব্য বৈঠকের স্থান
ওয়াশিংটনে ট্রাম্প, জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের বৈঠকের পর একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানান, সম্ভাব্য শীর্ষ বৈঠক হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে হতে পারে। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎস ইঙ্গিত দিয়েছেন, দুই সপ্তাহের মধ্যেই বৈঠক হতে পারে। তবে জেলেনস্কির ভাষায়, “এটা কঠিন হবে।”
হাঙ্গেরির অবস্থান
রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র হাঙ্গেরি আগেও দুইবার এ বৈঠক আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে বলে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজ্জার্তো নিশ্চিত করেছেন।
📌 বিশ্লেষণ:
ট্রাম্পের মধ্যস্থতা সত্ত্বেও রাশিয়া ও ইউক্রেইনের শান্তি আলোচনা এখনও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়ে গেছে। জেলেনস্কির কড়া অবস্থান ও রাশিয়ার অনীহা ইঙ্গিত দিচ্ছে, সামনে সমঝোতার পথ আরও জটিল হতে পারে।