প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরায়েলি হামলার পর প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমে মুখ খুলেছেন বেঁচে যাওয়া এক ঊর্ধ্বতন হামাস কর্মকর্তা গাজি হামাদ। আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি হামলার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
হামলার বিবরণ
গাজি হামাদ জানান, কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে পাওয়া মার্কিন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা জোরালো বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান।
তিনি বলেন, “আমরা তৎক্ষণাৎ বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যাই। শুরু থেকেই বুঝতে পেরেছিলাম এটি ইসরায়েলি গোলাবর্ষণ। আমরা গাজায় বাস করেছি, এমন হামলার অভিজ্ঞতা আগে বহুবার হয়েছে।”
তার ভাষ্য অনুযায়ী, এক মিনিটেরও কম সময়ে প্রায় ১২টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছিল। হামলায় পাঁচজন হামাস সদস্য এবং একজন কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হন। তবে হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতারা প্রাণে বেঁচে যান।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
-
যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় আলোচনার মাঝেই এ হামলা চালানো হয়।
-
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ঘটনায় “খুবই অসন্তুষ্ট” বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি ইসরায়েলকে কাতারে আর কোনো হামলা না চালানোর সতর্কবার্তাও দিয়েছেন।
-
হামলার পর আরব ও মুসলিম দেশগুলোর নেতারা দোহায় জরুরি বৈঠক করেন। সেখানে তারা ইসরায়েলের “কাপুরুষোচিত” হামলার নিন্দা জানালেও কোনো বাস্তব পদক্ষেপ ছাড়াই সম্মেলন শেষ হয়।
গাজার পরিস্থিতি ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
-
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি আগ্রাসনে ৬৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে প্রায় ১৯ হাজার শিশু।
-
গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের এক তদন্তে বলা হয়, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ কার্যত একটি গণহত্যা।
-
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ মানবাধিকার সংগঠনগুলোও একই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে।
-
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইতিমধ্যেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
গাজি হামাদ বলেন, যুদ্ধবিরতি আলোচনায় হামাসের অভিজ্ঞতা ছিল “তিক্ত” এবং মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।