প্রকাশিত: শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫
গাজা যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত ২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা এবং তাতে হামাসের আংশিক সম্মতিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন বিশ্বনেতারা। তাঁরা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতি ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘ ও পশ্চিমা বিশ্বের প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, হামাসের এই পদক্ষেপ তাঁকে ‘উৎসাহিত করেছে’। তিনি সব পক্ষকে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে আহ্বান জানান।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন,
“হামাসের মার্কিন শান্তি পরিকল্পনা গ্রহণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরিকল্পনা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে আমাদের শান্তির কাছাকাছি নিয়ে এসেছে।”
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে জিম্মি মুক্তির পথ তৈরি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়ে হামাসকে অস্ত্রসমর্পণ ও অবিলম্বে সব জিম্মি মুক্তির আহ্বান জানান।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ট্রাম্পের প্রস্তাবে হামাসের আংশিক সম্মতিকে ইতিবাচক বলে স্বাগত জানিয়েছে। একই সঙ্গে গাজায় অবিলম্বে হামলা বন্ধ করার আহ্বানকেও তারা সমর্থন করেছে।
মিসরও এই অগ্রগতিকে প্রশংসা করে বলেছে, ট্রাম্পের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনতে সহায়ক হবে।
তবে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম পরিকল্পনা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন,
“যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া শান্তি পরিকল্পনা নিখুঁত নয় এবং আমরা এর সব দিকের সঙ্গে একমত নই। তবে অগ্রাধিকার হওয়া উচিত ফিলিস্তিনি জনগণের জীবন রক্ষা।”
অন্যান্য নেতাদের বক্তব্য
- 
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো বলেছেন, তিনি এবার ট্রাম্পের সঙ্গে একমত কারণ তিনি হত্যাকাণ্ডের সমাপ্তি চেয়েছেন। প্রয়োজনে ফিলিস্তিন রক্ষায় কলম্বিয়ার সেনা মোতায়েনের কথাও জানিয়েছেন।
 - 
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, জিম্মি মুক্তির সম্ভাব্য ইঙ্গিত একটি বড় অগ্রগতি। ভারত সব ধরনের স্থায়ী ও ন্যায়সংগত শান্তি প্রচেষ্টায় জোরালো সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
 
ট্রাম্পের প্রস্তাবের মূল দিকগুলো
- 
অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর
 - 
হামাসের কাছে থাকা সব জিম্মি মুক্তি
 - 
ইসরায়েলে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি
 - 
গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের ধাপে ধাপে সরে যাওয়া
 - 
হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ ও গাজা শাসনে তাদের কোনো ভূমিকা না রাখা
 - 
আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে একটি অস্থায়ী সরকার গঠন
 - 
ভবিষ্যতে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের সুযোগ রাখা
 
হামাসের অবস্থান
হামাস জানিয়েছে, তারা বন্দিবিনিময়ের প্রক্রিয়া মেনে জীবিত ও মৃত সব জিম্মি মুক্তি দিতে প্রস্তুত। তবে এর জন্য মাঠপর্যায়ের শর্তাবলি পূরণ করতে হবে। গাজার ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থা ও ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের বিষয়ে তারা আরও আলোচনা চালিয়ে যেতে চায়।
বর্তমানে গাজায় ৪৮ জন ইসরায়েলি জিম্মি আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, যাঁদের মধ্যে জীবিত আছেন প্রায় ২০ জন।
👉 এখন আন্তর্জাতিক মহল মনে করছে, এই অগ্রগতিকে কাজে লাগিয়ে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতির পথে অগ্রসর হওয়া জরুরি।

