বেক্সিমকো শিল্পপার্কে অবস্থিত ১৬ কোম্পানির নামে ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। এ পার্কে ৩২টি কারখানার কথা বলা হলেও ১৬টির কোনো অস্তিত্ব নেই। আর অস্তিত্বহীন এসব কোম্পানির নামে ওই পরিমাণ ঋণ নেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ‘বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা–সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’র বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান শ্রম উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান প্রমুখ। শ্রম উপদেষ্টা বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসায়িক পরিস্থিতি পর্যালোচনা–সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির আহ্বায়ক। গত বছরের আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গঠিত এ উপদেষ্টা পরিষদ এখন পর্যন্ত পাঁচটি বৈঠক করেছে।
এদিকে বেক্সিমকো শিল্পপার্কের কর্মচারী ও শ্রমিকেরা গতকাল বুধবার গাজীপুরের শ্রীপুরে মায়ানগর মাঠে জমায়েত হয়ে লে অফ প্রত্যাহার করে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। ওই জমায়েতে তাঁরা ২২ জানুয়ারি (গতকাল) বিকেল তিনটার মধ্যে কারখানাগুলো খুলে না দিলে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধসহ শাটডাউন কর্মসূচি গ্রহণের ঘোষণা দেন। তাঁরা অগ্নিসংযোগের মতো কর্মকাণ্ডও করেন, যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করেন শ্রম উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এ জন্য তাঁদের সবাইকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। বেক্সিমকো শিল্পপার্কের কারখানাগুলো আবার চালু করা সম্ভব নয়। এসব কারখানার বিপরীতে দায়দেনা অনেক বেশি। এগুলো চালানোর উপযুক্ততা হারিয়েছে।
বেক্সিমকোর কর্মকর্তা-কর্মচারী, শ্রমিক ও দেশবাসীর অবগতির জন্য শ্রম উপদেষ্টা বলেন, বেক্সিমকো শিল্পপার্কে মোট ৩২টি কারখানার কথা বলা হলেও এর মধ্যে ১৬টির কোনো অস্তিত্ব নেই। কিন্তু এই ১৬ কোম্পানির বিপরীতেই ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ১২টি কারখানা লে অফ করা হয়েছে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে, সরকারের সিদ্ধান্তে নয়।
শ্রম উপদেষ্টা আরও বলেন, তিনটি কারখানা বর্তমানে চালু আছে। বেক্সিমকো লিমিটেডের মোট ব্যাংকঋণ ৪০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এর মধ্যে জনতা ব্যাংকের পাওনাই ২৩ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা। বেক্সিমকো শিল্পপার্কের ৩২টি কারখানার বিপরীতে ঋণ নেওয়া হয়েছে ২৯ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা।