২০১৯ সালে শুরু হয়েছিল ‘রিকশা গার্ল’ ছবির কাজ। এরপর বিশ্বের ৩০টির বেশি চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি প্রদর্শিত হয়েছে। কোথাও পুরস্কৃতও হয়েছে। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ১৮ রাজ্যের ৫২টি শহরে দেখানো হয় রিকশা গার্ল। ‘বিশ্বভ্রমণ’ শেষে এবার বাংলাদেশের দর্শক ছবিটি দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। অমিতাভ রেজা পরিচালিত ছবিটি আজ শুক্রবার দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে। আগে একাধিকবার ছবিটি মুক্তির কথা শোনা গেলেও নানা কারণে শেষ পর্যন্ত মুক্তি দেওয়া যায়নি। এত বছর পর ছবিটি যে অবশেষে মুক্তি পাচ্ছে, তাতে অভিনয়শিল্পী, প্রযোজক ও পরিচালক—সবাই একদিকে যেমন আনন্দিত, তেমনি আবার তাঁদের মন কিছুটা খারাপও।
মিতালি পারকিন্সের একই নামের উপন্যাস থেকে নির্মিত হয়েছে ‘রিকশা গার্ল’। পরিচালক অমিতাভ রেজা চৌধুরী রিকশাচিত্রের কল্পনাপ্রবণ জগৎকে এই চলচ্চিত্রে নাঈমার শিল্পীসত্তার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। শিল্পমনা নারী নাঈমাকে ঘিরে ‘রিকশা গার্ল’ ছবির গল্প তৈরি হয়েছে। সে ছবি আঁকতে পছন্দ করে। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে শুরু হয় নাঈমার লড়াই। ছবি এঁকে যেহেতু পয়সা মেলে না, তাই রিকশা নিয়ে রাস্তায় বের হয় ও। কীভাবে তার স্বপ্ন পূরণ করবে নাঈমা!
নাঈমা চরিত্রে অভিনয় করেছেন নভেরা রহমান। পরিচালক জানান, নাঈমা চরিত্র ঘিরে তাঁর যে প্রত্যাশা ছিল, তার চেয়ে অনেক ভালো অভিনয় করেছেন নভেরা। তাঁকে মাত্র চার মাস বয়সে প্রথম টেলিভিশনের পর্দায় দেখা যায়। বাংলাদেশ টেলিভিশনের দূরে কোথাও নাটক দিয়ে তাঁর পথচলা শুরু। অভিনয়শিল্পী মা মোমেনা চৌধুরী বাংলাদেশের নাটকে পরিচিত এক নাম। কানাডায় অর্থনীতি ও থিয়েটার বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন নভেরা। দুই বছর আগে লন্ডনের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রযোজনায় স্নাতকোত্তর করেছেন। এ মুহূর্তে সেখানকার একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কাজ করছেন। তবে দেশে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকেন। কাজ করেছেন রুবাইয়াত হোসেনের ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ (বাংলাদেশে শিমু নামে মুক্তি পায়) সিনেমায়। তাঁর অভিনীত প্রথম সিনেমা মান্নান হীরার ‘৭১-এর ক্ষুদিরাম’। এর বাইরে বেশ কয়েকটি নাটক ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন তিনি।
নভেরা রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বলেন, ‘খুবই ভালো লাগছে যে বাংলাদেশের গল্পটা বাংলাদেশের মানুষ অবশেষে দেখবে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ছবিটি যখন প্রিমিয়ার হয়, তখন দেখেছিলাম।’ ছোটবেলা থেকে অভিনয় করলেও নভেরার মতে, ‘আমি মনে করি, অভিনয়টা ছোটবেলায় ভালো পারতাম না। একটু বড় হয়ে কলেজে যাওয়ার পর যখন থিয়েটার নিয়ে পড়াশোনা করেছি, তখন একটু উন্নতি হয়।’ মায়ের সঙ্গেও অভিনয় করেছেন নভেরা, যেমনটা রিকশা গার্ল ছবিতেও করেছেন। তিনি বলেন, ‘চম্পা আপার সঙ্গে প্রথমবার কাজের অভিজ্ঞতা অনেক আরামদায়ক ছিল। উনি যে মাপের অভিনয়শিল্পী, আমরা তো শুরুতে একটু ভয়ে ভয়ে ছিলাম। কিন্তু তিনি খুবই অমায়িক একজন মানুষ। শুটিং সেটে আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন।’