রবিবার, ১লা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৫ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

টানা তিন সপ্তাহের দরপতনের পর বিশ্ববাজারে আবারও বাড়তে শুরু করেছে অপরিশোধিত তেলের দাম। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা, ওপেকের উৎপাদন হ্রাসের ঘোষণা এবং সরবরাহ সংকটের আশঙ্কা—এই তিনটি বিষয় একসঙ্গে কাজ করায় বাজারে ফের গতি এসেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর আরব নিউজ

সৌদি সময় বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টায় ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারস প্রতি ব্যারেল ৫৬ সেন্ট বা ০.৮৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬.৪১ ডলারে। অন্যদিকে, ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) প্রতি ব্যারেল ৬৫ সেন্ট বা ১.০৪ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৮৩.১২ ডলার।

এর আগের দিন, ১৬ এপ্রিল, উভয় বেঞ্চমার্কই ২ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পায়, যা ৩ এপ্রিলের পর সর্বোচ্চ মূল্য। ফলে বিশ্ববাজারে আবারও শক্তিশালী অবস্থানে ফিরেছে জ্বালানি তেল।

বৃদ্ধির পেছনে যে কারণগুলো

বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান বাজার প্রবণতার পেছনে রয়েছে একাধিক সমান্তরাল কারণ। আইজি মার্কেটের বিশ্লেষক টনি সাইকামোর মতে, ‘‘শর্ট কাভারিং, দুর্বল মার্কিন ডলার এবং ইরানের উপর যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক চাপ বাজারকে চাঙা করেছে।’’ এছাড়া, ডলার দুর্বল হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে তেল কিনতে ব্যয় কমে গেছে, যা চাহিদা বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তেল রপ্তানিকে লক্ষ্য করে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যার আওতায় এসেছে চীনের একটি ছোট রিফাইনারিও। এই পদক্ষেপ ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ঘিরে কূটনৈতিক উত্তেজনার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

অন্যদিকে, ওপেক জানিয়েছে, সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ইরাক ও কাজাখস্তান অতিরিক্ত উৎপাদনের ক্ষতিপূরণ হিসেবে নতুন করে উৎপাদন হ্রাস করবে। যদিও বাস্তবতায় এই ধরনের প্রতিশ্রুতি সবসময় পূর্ণ মাত্রায় কার্যকর হয় না, তবুও বাজারে এটি ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করেছে।

জ্বালানি মজুদের তথ্য ও বাজার প্রতিক্রিয়া

মার্কিন জ্বালানি বিভাগের সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা গেছে, দেশটিতে পেট্রোল ও ডিস্টিলেট মজুদ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে এবং সাপ্তাহিক অপরিশোধিত তেল মজুদও প্রত্যাশার তুলনায় অনেক কম। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ‘‘রিফাইনিং কমে যাওয়ার ফলে অতিরিক্ত সরবরাহের আশঙ্কা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।’’

সতর্কতা ও ভবিষ্যৎ পূর্বাভাস

বাজারে আশাবাদের পাশাপাশি সতর্কতার বার্তাও রয়েছে। ওপেক, আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (IEA), গোল্ডম্যান স্যাকস ও জেপি মরগানের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তেলের চাহিদা ও দামের পূর্বাভাস সম্প্রতি কমিয়ে এনেছে। বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য উত্তেজনা, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতি এবং চীনের সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি হ্রাসকে এর জন্য দায়ী করা হচ্ছে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (WTO) পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৫ সালে বৈশ্বিক পণ্যের বাণিজ্য ০.২ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে—যেখানে পূর্বাভাস ছিল ৩ শতাংশ বৃদ্ধির।

Leave A Reply

বৈদেশিক কর্মসংস্থান, অভিবাস ও প্রবাস জীবন সংক্রান্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল।

যোগাযোগ

সিটি হার্ট শপিং কমপ্লেক্স (১১তম ফ্লো), রুম ১২/৮, ৬৭, নয়াপল্টন, ভিআইপি রোড, ঢাকা-১০০০, ফোন: +৮৮০ ১৫৩৩-১৯০৩৭১, ইমেইল: info@probashbulletin.com

Exit mobile version