আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রবাস বুলেটিন
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলমান। এমন এক প্রেক্ষাপটে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সোমবার (স্থানীয় সময়) ঘোষণা দিয়েছেন, রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি দ্বিপাক্ষিক শান্তি আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এটিই পুতিনের প্রথম সরাসরি শান্তি আলোচনার প্রস্তাব, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।
ট্রাম্পের মন্তব্যের পরেই পুতিনের শান্তি বার্তা
পুতিনের বক্তব্যের ঠিক কিছু সময় আগে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ ঘোষণা দেন, “চলতি সপ্তাহেই রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির চুক্তি হতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে আমেরিকা রাশিয়ার উপর থেকে আর্থিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিতে পারে।”
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পরপরই পুতিনের শান্তি আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করা কূটনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
ইস্টারের যুদ্ধবিরতির পরে নতুন প্রত্যাশা
গত সপ্তাহেই খ্রিস্টানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ইস্টার উপলক্ষে ৩০ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিলেন পুতিন। তবে সেই সিদ্ধান্তকে ‘শান্তির ভান’ বলে দাবি করে ইউক্রেন। যুদ্ধবিরতির সময় দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে।
সেই ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেই পুতিনের এই সরাসরি আলোচনার আহ্বান নতুন করে আন্তর্জাতিক সংলাপ ও কূটনৈতিক উদ্যোগকে ত্বরান্বিত করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ট্রাম্প প্রশাসনের ভূমিকা
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ নিরসনে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে আসছেন। গত বছরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারেও তিনি এই যুদ্ধ বন্ধের অঙ্গীকার করেন। তাঁর দাবি, “যুদ্ধবিরতি হলে রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়েই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য করে নিজেদের ভাগ্য গড়বে।”
পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
যদিও এখনো দ্বিপাক্ষিক আলোচনার স্থান ও সময় নির্ধারণ হয়নি, তবে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল ইতোমধ্যে এই বিষয়টি ঘিরে আশাবাদী ও সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছে। পুতিনের এ ধরনের প্রস্তাব যদি কার্যকর উদ্যোগে পরিণত হয়, তবে এটি হতে পারে দীর্ঘদিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসানের সম্ভাব্য সূচনা।