নওগাঁ, ২৬ এপ্রিল ২০২৫:
লিবিয়ায় ২৭ বাংলাদেশিকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় জড়িত চক্রের মূল হোতা জাহিদ হোসেনকে (২৭) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৫। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাতে নওগাঁর রানীনগর উপজেলার সিংগারাপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার রাজশাহীতে র্যাব সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ।
গ্রেপ্তারকৃত জাহিদ হোসেনের বাবার নাম এহরাম সরদার। এই চক্রের অন্যতম ভুক্তভোগী ইয়াকুব আলী (৩৮), যিনি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগরায় গ্রামের বাসিন্দা, দেশে ফিরে মামলা দায়ের করলে র্যাব অভিযানে নামে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রায় দুই বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে ইয়াকুব আলীর সঙ্গে জাহিদের পরিচয় হয়। ইতালিতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থাকার কথা বলে জাহিদ ইয়াকুবকে সেখানে চাকরির প্রলোভন দেখান। ২০২৩ সালের ১০ আগস্ট চুক্তির মাধ্যমে ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে ইতালি পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়। পাঁচ লাখ টাকা অগ্রিম নেওয়ার পর ইয়াকুবসহ ২৬ জনকে দুবাই হয়ে নাইজার ও আলজেরিয়ায় পাঠানো হয়। সেখানে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে এবং কিছুদিন জেলে রাখে। পরে চক্রটি তাদের তিউনিশিয়া হয়ে লিবিয়ায় নিয়ে যায়।
লিবিয়ায় পৌঁছে ২৭ জনকে একটি বাড়িতে আটকে রাখা হয় এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। পরে তাদের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। ইয়াকুবের পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করা হয়, যার মধ্যে ৩৫ লাখ টাকা বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়।
ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর লিবিয়ায় বাংলাদেশের দূতাবাসের হস্তক্ষেপে তাদের উদ্ধার করা হয়। ইয়াকুব ৯ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসেন এবং ২৫ মার্চ কুড়িগ্রাম সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
র্যাবের অধিনায়ক আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃত জাহিদ হোসেন নিজ অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন যে, বিদেশগামীদের প্রলোভন দেখিয়ে পরে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করতেন। বর্তমানে র্যাব অন্য পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান পরিচালনা করছে।