রিপোর্ট: তুষার, প্রবাস বুলেটিন
লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যকার উচ্চপর্যায়ের বৈঠকটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি সম্ভাবনাময় মোড় তৈরি করেছে বলে মত প্রকাশ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সহকারী প্রেস সচিব আশিক ইসলাম।
শুক্রবার নিজের সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক বিশ্লেষণধর্মী পোস্টে আশিক ইসলাম বলেন, “এই বৈঠক শুধুমাত্র দুটি ব্যক্তির মধ্যকার সাক্ষাৎ নয়, এটি এক নতুন রাজনৈতিক যুগের সূচনার আভাস।” তিনি মন্তব্য করেন, “ড. ইউনূসের হাতের উপর তারেক রহমানের হাত রাখার ভঙ্গি—স্নেহ, শ্রদ্ধা, আস্থা এবং নির্ভরতার প্রতীক।”
রাষ্ট্রনায়কসুলভ উপস্থিতি
আশিক ইসলাম বৈঠকে তারেক রহমানের আচরণ, পোশাক ও দেহভঙ্গির বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে বলেন, “একজন সত্যিকারের রাষ্ট্রনায়কের মতোই তিনি ছিলেন আত্মবিশ্বাসী, সংযত এবং আভিজাত্যপূর্ণ। টাইবিহীন সাদা শার্টের ওপর হালকা নীল স্যুট পরিহিত তারেক রহমান হোটেলে প্রবেশের সময় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে হাসিমুখে হাত নাড়েন, যা যেন সারা দেশের নেতাকর্মীদের প্রতি তার শুভেচ্ছা।”
বৈঠকের শুরুতে দুই নেতা করমর্দনে যুক্ত হন। তখন ড. ইউনূস তারেক রহমানের হাতের ওপর আলতোভাবে নিজের আরেক হাত রাখেন—এই ভঙ্গিকে আশিক ইসলাম রাজনৈতিক আস্থা ও পারস্পরিক সম্মানের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেন।
আলাপচারিতা ও মনোযোগ
বৈঠক চলাকালীন দৃষ্টিভঙ্গি, হাতের ভঙ্গিমা ও শব্দহীন ভাষাও আলোচনায় উঠে আসে। আশিক ইসলাম জানান, “তারেক রহমানের খোলা তালু ও করবন্ধন ইঙ্গিত করে তাঁর সততা, স্বচ্ছতা ও ঐক্যের মনোভাব। মুখে সংযত হাসি এবং শরীরী ভাষার ভারসাম্য, আত্মবিশ্বাস ও শ্রদ্ধার প্রকাশ ঘটিয়েছে।”
কুশল বিনিময়ের সময় তারেক রহমান বলেন, “আম্মা আপনাকে সালাম জানিয়েছেন।” আশিক ইসলাম একে বাংলাদেশের ধর্মীয় ও সামাজিক সৌজন্যের প্রতিচ্ছবি হিসেবে তুলে ধরেন।
দেশপ্রেম ও মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু
আলাপচারিতায় আবহাওয়া প্রসঙ্গ থেকে শুরু করে লন্ডনের রাস্তাঘাটের পরিপাটি ব্যবস্থা ও বগুড়ার প্রসঙ্গ এনে দেন তারেক রহমান। আশিক ইসলাম বলেন, “এমন মন্তব্যে প্রতিফলিত হয়, তার চিন্তায় সব সময় বাংলাদেশ ও দেশের মানুষ।”
বৈঠকের শেষে উভয় নেতা দৃঢ় পদক্ষেপে কক্ষ ত্যাগ করেন। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমানের হাসি ও শুভেচ্ছা জানানোর ভঙ্গিমাকে রাষ্ট্রনায়কসুলভ বলেই উল্লেখ করেন আশিক ইসলাম।
আন্তর্জাতিক নেতাদের উদাহরণ টেনে বিশ্লেষণ
বিশ্লেষণে তিনি বলেন, “যুগে যুগে মানুষ নেতাদের শরীরী ভাষা দিয়ে তাদের নেতৃত্ব বিচার করে এসেছে। বারাক ওবামার চোখের যোগাযোগ, অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের ‘ত্রিভুজ’ হাতের অবস্থান বা ম্যান্ডেলার উষ্ণতা ও মর্যাদা—সবই রাজনীতির অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ।”
উপসংহার
এই বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি নিছক একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়। এটি হতে পারে একটি নতুন রাজনৈতিক জোট, ঐক্য অথবা বৃহত্তর কৌশলের সূচনা। তারেক রহমান ও ড. ইউনূসের এই সাক্ষাৎ ভবিষ্যতের রাজনীতিতে কী বার্তা নিয়ে আসে, তা সময়ই বলে দেবে।
