নিউজ ডেস্ক | প্রবাস বুলেটিন
ইরানে সম্ভাব্য সামরিক অভিযান নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত কয়েক দিন ধরেই গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করছিলেন। অথচ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে হামলার প্রস্তুতির খবর ছড়িয়ে পড়লে ট্রাম্প কৌশলে প্রকৃত পরিকল্পনা আড়াল করার উদ্যোগ নেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র।
ওই সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তখন তাঁর শীর্ষ উপদেষ্টাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন সংবাদমাধ্যমকে জানাতে—তিনি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে কোনো পদক্ষেপ নেবেন কি না, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি। মূলত ইরানকে বিভ্রান্ত করতে এবং গোপনে সামরিক প্রস্তুতি চালিয়ে যেতে এই সময়সীমার ঘোষণা ছিল একটি কৌশল।
ট্রাম্প নাখোশ ছিলেন সংবাদমাধ্যমের এমন খবরে, যেখানে বলা হয়েছিল তিনি ইতিমধ্যে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওই পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্টের ভাবনা ছিল, সময়সীমার কথা বললে ইরান মনে করবে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি এবং মার্কিন পক্ষ তাদের আক্রমণ পরিকল্পনা থেকে দূরে রয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা ও ডানপন্থী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব স্টিভ ব্যানন যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের আন্তর্জাতিক সামরিক সম্পৃক্ততার প্রকাশ্য বিরোধিতা করে আসছিলেন। গত বৃহস্পতিবার ব্যাননের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজের আগে ট্রাম্প তাঁর এই বিবৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন। পরবর্তীতে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সাংবাদিকদের জানান—প্রেসিডেন্ট এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাননি।
তবে হোয়াইট হাউসের অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, বাস্তবে প্রেসিডেন্ট ইতোমধ্যে মানসিকভাবে হামলার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। সূত্র অনুযায়ী, গত শনিবার আকাশে মার্কিন বোমারু বিমান ওড়ার আগেই প্রেসিডেন্টকে সামরিক পরিকল্পনার সর্বশেষ আপডেট জানানো হয়েছিল। তিনি প্রতিদিনই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করেছেন এবং একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ রেখেছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া এবং তথ্য ব্যবস্থাপনার একটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত, যেখানে কৌশলগত বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে সামরিক তৎপরতা গোপনে পরিচালনার চেষ্টা করা হয়েছে।