সোমবার, ২৭শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১১ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ঢাকা, ১০ আগস্ট —

দেশের প্রবাস আয়ের প্রবাহ এক ঐতিহাসিক মাইলফলক স্পর্শ করেছে। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেমিট্যান্স ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে, যা এক বছরের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ হাজার ৩২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬.৮ শতাংশ বেশি। প্রতি ডলার ১২৩ টাকা ধরে হিসাব করলে এই আয় দাঁড়ায় প্রায় তিন লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা।

শুধু জুন মাসেই দেশে এসেছে দুই হাজার ৮১৮ মিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। উল্লেখযোগ্যভাবে, গত ৩০ জুন একদিনে রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ১১৩ মিলিয়ন ডলার।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, হুন্ডি রোধে সরকারি পদক্ষেপ, বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রণোদনা, ব্যাংকিং প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং কর্মসংস্থানের বিস্তার—এই ধারাবাহিকতায় প্রবাহ বেড়েছে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ‘নেট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ’ লক্ষ্যমাত্রা পূরণেও এই রেমিট্যান্স সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মী প্রেরণ বৃদ্ধি পেলে এবং হুন্ডির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা বজায় থাকলে রেমিট্যান্স প্রবাহ আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড পিস স্টাডিজের (সিএসপিএস) নির্বাহী পরিচালক ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, “সরকার পরিবর্তনের পর মাত্র আট মাসে রেমিট্যান্স সাত বিলিয়ন ডলার বেড়েছে। আস্থাবান সরকার থাকলে এবং দক্ষ কর্মী পাঠানো বাড়ালে বার্ষিক রেমিট্যান্স ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা সম্ভব।”

প্রবাসীদের পাঠানো আয় বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, আমদানি ব্যয় নির্বাহ, মুদ্রা বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা এবং গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল রাখার অন্যতম ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হলে প্রশিক্ষণ, ভাষা শিক্ষা ও বিদেশগামীদের প্রস্তুতিমূলক কর্মসূচি জাতীয় অগ্রাধিকারে আনতে হবে।

Leave A Reply

বৈদেশিক কর্মসংস্থান, অভিবাস ও প্রবাস জীবন সংক্রান্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল।

যোগাযোগ

সিটি হার্ট শপিং কমপ্লেক্স (১১তম ফ্লো), রুম ১২/৮, ৬৭, নয়াপল্টন, ভিআইপি রোড, ঢাকা-১০০০, ফোন: +৮৮০ ১৫৩৩-১৯০৩৭১, ইমেইল: info@probashbulletin.com

Exit mobile version