ঢাকা প্রতিবেদক │ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্টা শুল্ক নিয়ে দর-কষাকষি তিনটি মূলনীতির ভিত্তিতে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতে এই শুল্কহার আরও কমতে পারে।
রবিবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর গুলশান ক্লাবে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতারা।
তিনটি মূলনীতি
খলিলুর রহমান জানান,
-
পরবর্তী সরকারের ক্ষমতা: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিসেবে তারা কোনো চুক্তি এমনভাবে করবে না, যা পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের ওপর স্থায়ী দায় বা বাধ্যবাধকতা চাপিয়ে দেবে। চুক্তি পরিবর্তন, পরিমার্জন বা বাতিল করার ক্ষমতা নির্বাচিত সরকারের হাতে থাকবে।
-
সীমিত দায়: বাংলাদেশের সক্ষমতার বাইরে কোনো শর্ত গ্রহণ করা হবে না।
-
দ্বিপক্ষীয় সীমাবদ্ধতা: চুক্তিটি কেবল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হবে; কোনো তৃতীয় দেশ বা ভূরাজনৈতিক ইস্যু এতে যুক্ত হবে না।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সুতা ব্যবহার করলে শুল্কের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে, প্রতিযোগী দেশের শুল্কহার এখনো চূড়ান্ত হয়নি, তবে বাংলাদেশের হার প্রতিযোগিতামূলক রাখা হবে। এছাড়া কিছু আলোচনা এখনো বাকি আছে, যা সফল হলে আরও ছাড় পাওয়া সম্ভব।
তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনা
খলিলুর রহমান জানান, এ বিষয়ে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গেও ৪৫ মিনিট আলোচনা হয়েছে এবং এটিকে বাংলাদেশের জন্য বড় সুযোগ হিসেবে কাজে লাগানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা ও ব্যবসায়ী নেতাদের প্রতিক্রিয়া
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, চাপের মুখেও অংশীজনদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে আলোচনা চালানো হয়েছে এবং প্রয়োজনে আগামী দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে আবার যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, পাল্টা শুল্ক আপাতত সমাধান হলেও এলডিসি থেকে উত্তরণ এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান জানান, শুরুতে শুল্ক নিয়ে ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সুতা ব্যবহারে ছাড় পাওয়ার প্রক্রিয়া স্পষ্ট করতে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।
বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, শুল্ক কমানো সন্তোষজনক হলেও আরও ছাড়ের আশা রয়েছে। বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম গ্যাস সংকট, ব্যাংকিং সমস্যাসহ শিল্প খাতের অন্যান্য চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন।
বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজীজ রাসেল বলেন, সরকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যে সহযোগিতামূলক মনোভাব দেখাচ্ছে, তা নজিরবিহীন এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেন, শুল্কহার কমানোয় তারা সরকারের ও আলোচক দলের প্রতি সন্তুষ্ট।
শেষ কথা: পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনায় প্রাথমিক সাফল্য এলেও বাকি বিষয়গুলোতে সমঝোতা হলে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতা আরও জোরদার হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।