প্রকাশের তারিখ: শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫
দেশের ব্যাংক খাতে বড় রূপান্তর হতে যাচ্ছে। ইতিহাসে প্রথমবার একসঙ্গে পাঁচটি শরিয়াহভিত্তিক বেসরকারি ব্যাংককে একীভূত করে গঠন করা হবে নতুন প্রতিষ্ঠান—ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক।
প্রশাসক নিয়োগ ও নেতৃত্ব
নতুন ব্যাংকের গঠন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে প্রতিটি ব্যাংকে একজন প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রশাসকরা সবাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচ্চ পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
নির্ধারিত প্রশাসকরা:
- 
এক্সিম ব্যাংক: নির্বাহী পরিচালক মো. শওকাতুল আলম
 - 
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক: নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদার
 - 
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক: নির্বাহী পরিচালক মো. সালাহ উদ্দিন
 - 
ইউনিয়ন ব্যাংক: সিলেট অফিসের পরিচালক মোহাম্মদ আবুল হাসেম
 - 
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক: ট্যাংকশালের পরিচালক মো. মোকসুদুজ্জামান
 
প্রতিটি ব্যাংকে প্রশাসকের সঙ্গে একজন অতিরিক্ত পরিচালক, একজন যুগ্ম পরিচালক ও একজন উপপরিচালক থাকবেন, ফলে পূর্ণাঙ্গ প্রশাসক টিম দায়িত্ব নেবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, “একীভূতকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রশাসক নিয়োগ পরিচালনা পর্ষদের সভায় অনুমোদিত হয়েছে। প্রজ্ঞাপন জারির পর প্রশাসকরা দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।”
ব্যাংকগুলোতে অনিয়ম ও খেলাপি ঋণ
পাঁচটি ব্যাংকের ঋণ খেলাপি ও অনিয়মের ইতিহাস দীর্ঘদিনের। ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। বর্তমানে:
- 
মোট আমানত: প্রায় ১ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা
 - 
মোট ঋণ: ১ লাখ ৯২,৭৮৬ কোটি টাকা, যার ৭৬% খেলাপি
 
খেলাপি ঋণের স্তর ব্যাংকভিত্তিক:
- 
ইউনিয়ন ব্যাংক: ৯৮%
 - 
ফার্স্ট সিকিউরিটি: ৯৭%
 - 
গ্লোবাল: ৯৫%
 - 
সোশ্যাল ইসলামী: ৬২.৩%
 - 
এক্সিম: ৪৮.২%
 
অমান্য ঋণ ও অনিয়মের কারণে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া প্রায় অসম্ভব।
অর্থায়ন পরিকল্পনা
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, নতুন ব্যাংকের জন্য ৩৫,২০০ কোটি টাকার প্রয়োজন। এর উৎস:
- 
সরকার: ২০,২০০ কোটি টাকা
 - 
আমানত বিমা ট্রাস্ট: ৭,৫০০ কোটি টাকা
 - 
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা: ৭,৫০০ কোটি টাকা
 
সরকার ইতিমধ্যে অর্থায়নের জন্য সম্মতি দিয়েছে।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, “এটি ব্যাংক খাত সংস্কারের নতুন অধ্যায়। তবে সঠিক নেতৃত্ব না এলে রাজনৈতিক প্রভাবে পথচ্যুত হওয়ার ঝুঁকি আছে।”
