প্রকাশিত: রোববার, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দুই নম্বর গেইট এলাকায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে রাতভর সংঘর্ষের পর রোববার সকালেও নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক কামাল উদ্দিনসহ অনেকেই আহত হয়েছেন।
কীভাবে সংঘর্ষের সূত্রপাত
শনিবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন একটি ভবনের নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে এক ছাত্রীর বিতণ্ডা থেকে সংঘর্ষের সূচনা হয়।
-
রাত ১১টার দিকে ওই ছাত্রী বাসায় ফিরলে প্রহরী গেইট খোলার সময় তর্কে জড়িয়ে পড়েন।
-
অভিযোগ রয়েছে, প্রহরী ছাত্রীকে গালাগাল করার পাশাপাশি চড় মারেন।
-
খবর পেয়ে সহপাঠীরা ঘটনাস্থলে গেলে গ্রামবাসী নিরাপত্তারক্ষীর পক্ষ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।
-
পরে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়।
রাতভর সংঘর্ষ ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ
রাত ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মো. হায়দার আরিফ ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে সবার সহযোগিতা চান। তিনি উল্লেখ করেন, বহু শিক্ষার্থী, প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্য ও নিরাপত্তা কর্মী আহত হয়েছেন।
ভোরের দিকে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক কামাল উদ্দিন জানান, পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকায় শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবু তৈয়ব জানান, রাতে অন্তত ৬০ জন আহত শিক্ষার্থীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২১ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুনরায় সংঘর্ষ ও প্রশাসনের হতাহতের ঘটনা
রোববার বেলা ১১টার পর শিক্ষার্থীরা দলে দলে দুই নম্বর গেইট এলাকায় গেলে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক কামাল উদ্দিন ইটের আঘাতে আহত হন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকরা জানান, দুই পক্ষ এখনও লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান করছে এবং থেমে থেমে ঢিল ছুড়ছে।
চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) রাসেল জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।
একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত
সংঘর্ষের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। রোববার কোনো শিক্ষার্থী ক্লাসে যোগ দেননি।