শনিবার, ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা বলেছেন, শাসকগোষ্ঠী আদিবাসী শব্দটা ভয় পাচ্ছে। আদিবাসী শব্দ যদি জাতিসংঘের ঘোষিত নির্দেশ বা পরামর্শ অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার স্বীকার করে, তাহলে তাদের শব্দ মেনে নিয়ে অনুস্বাক্ষর করতে হবে। তাদের ভাবনা-দুর্ভাবনা হলো আদিবাসীদের জাতিসংঘের ঘোষিত অধিকারগুলো দিতে হবে।

আজ শনিবার দুপুরে রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জম্মু জনগণের সামগ্রিক পরিস্থিতি আলোকে সমাজের ভূমিকা প্রসঙ্গে সুধী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন। রাঙামাটি শহরের নিউমার্কেট এলাকায় স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা আশিকা হলরুমে পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসী ফোরামের উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়।

সন্তু লারমা বলেন, আসলে আদিবাসী কোনো জাতিগোষ্ঠীর নাম নয়, আদিবাসী হচ্ছে জনগোষ্ঠীর শব্দ। তাঁরা আদিবাসী, যাঁরা বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে জীবনধারণ করে। এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলো আপনাদের জানা আছে।

এ দেশের সরকার গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল নয় উল্লেখ করে সন্তু লারমা বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে, মানবসমাজের বিকাশে আমরা দেখেছি লড়াই, সংগ্রাম এবং বল প্রয়োগ ছাড়া কোনো অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। কোনো জাতি আত্মপ্রকাশ ও কোনো জাতি নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারেনি।

সন্তু লারমা আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক ও ভয়াবহ। পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৩ ভাষাভাষী ১৪টি আদিবাসী জনগোষ্ঠী আজ নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। পার্বত্যাঞ্চলের জম্মু জনগণ একটা নিরাপত্তাহীন, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে বেঁচে আছে। একটা গ্রাফিতি নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ৫১টি ভাষাভাষী আদিবাসী জাতির অস্তিত্ব এ দেশে অবাঞ্ছিত করা হয়েছে। কারণ, গ্রাফিতিতে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, মুসলিম এবং আদিবাসী লেখা রয়েছে। সেখান থেকে আদিবাসী পাতাটি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। বাংলাদেশ যদি বহুজাতিক ও বহুসংস্কৃতির দেশ হয়ে থাকে, তাহলে শুধু এ দেশে বাঙালি জাতি বাস করে না। এ দেশে অন্তত ৫১টি আদিবাসী জাতি বসবাস করে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য অঞ্চল আদিবাসী ফোরামের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএস মং মারমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক অংচ মং মারমা, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মুধ মঙ্গল চাকমা, সাহিত্যিক শিশির চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সভাপতি থোয়াই অং মারমা, পার্বত্য অঞ্চল আদিবাসী ফোরামের ছাত্র ও যুববিষয়ক সম্পাদক লেলুং খুমি, আইনজীবী দীননাথ তঞ্চঙ্গ্যা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মনোজ বাহাদুর গুর্খা, পার্বত্য অঞ্চল আদিবাসী ফোরামের সদস্য নমিতা চাকমা, সাধারণ সম্পাদক ইন্টুমনি তালুকদার প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ বছর ধরে চুক্তি বাস্তবায়নের কোনো কাজ করেনি। সরকার জনসংহতি সমিতিকে (জেএসএস) মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে।

Leave A Reply

বৈদেশিক কর্মসংস্থান, অভিবাস ও প্রবাস জীবন সংক্রান্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল।

যোগাযোগ

সিটি হার্ট শপিং কমপ্লেক্স (১১তম ফ্লো), রুম ১২/৮, ৬৭, নয়াপল্টন, ভিআইপি রোড, ঢাকা-১০০০, ফোন: +৮৮০ ১৫৩৩-১৯০৩৭১, ইমেইল: info@probashbulletin.com

Exit mobile version