মঙ্গলবার, ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বিদেশি কূটনীতিকের কাছে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি ও ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগে মডেল ও মিস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় কূটনীতিকের নাম উল্লেখ না থাকলেও রাষ্ট্রীয় মর্যাদার ব্যক্তি হিসেবে তাঁর জড়িত থাকার বিষয়টি মামলা ও শুনানিতে উঠে এসেছে।

প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের করা মামলার বাদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আবদুল আলীম। মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন মেঘনা আলম, ব্যবসায়ী দেওয়ান সমির এবং আরও ২-৩ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযুক্তরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। এ চক্রটি বিদেশি কূটনীতিক ও দেশীয় ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে তাদের সম্মানহানির ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে আসছিল।

এজাহারে আরও বলা হয়, ২৯ মার্চ রাজধানীর ধানমন্ডির এক রেস্তোরাঁয় একটি গোপন বৈঠকে অভিযুক্তরা পাঁচ মিলিয়ন ডলার দাবি করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। ওই বৈঠকে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে অর্থ আদায়ের পরিকল্পনা করা হয়। এতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

মেঘনা আলমকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মঞ্জুর করেন। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী শুনানিতে বলেন, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে অভিনব কৌশলে হানি ট্র্যাপ ও ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে অর্থ আদায় করে আসছে এবং সর্বশেষ তারা সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসার কাছ থেকে অর্থ দাবি করেছেন।

আদালতে নিজের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে মেঘনা বলেন, “আমার নাম মেঘনা, মেঘলা নয়। সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছিল। তাঁর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছাড়া আর কারও সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছেন।” মেঘনা আরও দাবি করেন, “বিনা বিচারে আমাকে জেলে পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে আমি কোনো আইনজীবী পাব না।”

অন্যদিকে, সহআসামি দেওয়ান সমির আদালতকে বলেন, “আমাকে মেঘনার বয়ফ্রেন্ড বলা হচ্ছে, এটা সঠিক নয়। আমি সাধারণ একজন প্রবাসী, রেমিটেন্স যোদ্ধা। এ মামলার কিছুই আমি জানি না।”

আদালত দুইজনকেই গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন এবং দেওয়ান সমিরকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়ার অনুমতি দেন।

এর আগে, গত ৯ এপ্রিল রাজধানীর বসুন্ধরা থেকে ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন মেঘনা। পরদিন বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাঁকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। এই আটকাদেশের বিরুদ্ধে মেঘনার বাবা হাইকোর্টে রিট করেন, যার প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেছে।

প্রসঙ্গত, মেঘনা আলম ২০২০ সালের ৫ অক্টোবর “মিস আর্থ বাংলাদেশ” প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন এবং “মিস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন”-এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

Leave A Reply

বৈদেশিক কর্মসংস্থান, অভিবাস ও প্রবাস জীবন সংক্রান্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল।

যোগাযোগ

সিটি হার্ট শপিং কমপ্লেক্স (১১তম ফ্লো), রুম ১২/৮, ৬৭, নয়াপল্টন, ভিআইপি রোড, ঢাকা-১০০০, ফোন: +৮৮০ ১৫৩৩-১৯০৩৭১, ইমেইল: info@probashbulletin.com

Exit mobile version