বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) যন্ত্রকৌশল বিভাগের একটি দল নতুন নিরাপত্তাযুক্ত রিকশার নকশা তৈরি করেছে, যা ঢাকার রাস্তায় চলাচলকারী পুরোনো রিকশার চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ হবে। বুয়েটের এই নতুন রিকশার নকশায় ১৬টি উন্নত বৈশিষ্ট্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা বর্তমানে চলমান ব্যাটারিচালিত রিকশার নিরাপত্তা সমস্যা সমাধান করতে সহায়তা করবে।
নতুন নকশা সম্পর্কে বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. এহসান জানান, ২০২২ সাল থেকে এই প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু হয় এবং দীর্ঘ আলোচনার পর ডিএনসিসি (ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন) নতুন রিকশা ঢাকার রাস্তায় চলাচলের অনুমতি দিয়েছে। পুরোনো রিকশাগুলোর পরিবর্তে এই নতুন নকশার রিকশা ধীরে ধীরে সড়ক থেকে তুলে নেওয়া হবে।
বুয়েটের দলটির নেতৃত্বে কাজ করা অধ্যাপক মো. এহসান জানান, নতুন রিকশা ৩.২ মিটার দৈর্ঘ্য, ১.৫ মিটার প্রস্থ এবং ২.১ মিটার উচ্চতা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এটি ৩২৫ থেকে ৪২৫ কেজি পর্যন্ত ওজন বহন করতে সক্ষম। নতুন রিকশার গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে রয়েছে উন্নত ‘হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক’ এবং ‘পার্কিং ব্রেক’, যা রিকশার নিয়ন্ত্রণ সহজ করবে। এছাড়া, ‘লুকিং গ্লাস’, ‘ইন্ডিকেটর’, ‘হেডলাইট’, ‘উইন্ডশিল্ড’, ও ‘কাচের ছাউনি’-র মতো আধুনিক ফিচারগুলো চালক ও যাত্রীদের নিরাপত্তা বাড়াবে।
নতুন রিকশার ব্যাটারি একবার চার্জে প্রায় ১২০ কিলোমিটার চলতে পারবে। ব্যাটারি পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে প্রতি দেড় বছর পর পর এবং পুরোনো ব্যাটারিগুলো রিসাইকেল করা হবে। এই নতুন রিকশার দাম প্রায় দেড় লাখ টাকার আশপাশে হতে পারে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, তারা খুব শিগগিরই নতুন রিকশাগুলোর জন্য প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা শুরু করবে এবং রিকশার নিবন্ধন ও লাইসেন্সিং ব্যবস্থা চালু করবে। তবে, শহরের পুরো এলাকাতে রিকশা চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে না, সরকার নির্ধারণ করবে কোন কোন এলাকায় এই রিকশাগুলি চলতে পারবে।
বুয়েটের নতুন নকশার রিকশা, যা আধুনিক প্রযুক্তি এবং নিরাপত্তা মানদণ্ডের সাথে তৈরি, ঢাকা শহরের সড়ক ব্যবস্থাকে আরো উন্নত এবং নিরাপদ করতে সহায়ক হবে।
