ইরানের টানা দ্বিতীয় দিনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কাঁপছে ইসরায়েল: হায়ফায় সরাসরি আঘাত, তেলআবিবে আতঙ্ক

প্রতিবেদন: তুষার হোসেন | প্রবাস বুলেটিন

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই বাড়ছে। ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন নিশ্চিত করেছে যে, শনিবার রাতেও ইসরায়েলের দিকে একাধিক মিসাইল ছোঁড়া হয়েছে।

ইরানের নতুন এ হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশটির বাণিজ্যিক কেন্দ্র হায়ফা অঞ্চল। টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, হায়ফার আকাশে ইরানের ছোড়া একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। যদিও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিছু মিসাইল ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে, তথাপি সরাসরি আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আতঙ্কে ইসরায়েলবাসী: তেলআবিবে আকাশজুড়ে মিসাইল

সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা সরাসরি ভিডিও সম্প্রচারে জানিয়েছে, তেলআবিবের আকাশে দর্শনীয় সংখ্যক মিসাইল ছুটে আসতে দেখা গেছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) জরুরি নির্দেশনায় সব নাগরিককে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ঘরের বাইরে না যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।

আকাশে আগুন, ভূমিতে আতঙ্ক

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, হায়ফার আকাশে একাধিক মিসাইল ভূপাতিত করার প্রচেষ্টা চললেও কিছু মিসাইল সফলভাবে লক্ষ্যভাগে আঘাত হানে। এসব ফুটেজে বিস্ফোরণের তীব্র আলো এবং ধোঁয়া স্পষ্ট দেখা গেছে।

বিস্ফোরণ আম্মানেও

এ হামলার প্রভাব ইসরায়েলের বাইরেও অনুভূত হয়েছে। জর্ডানের রাজধানী আম্মানেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের মতে, ইরানের ছোড়া মিসাইলগুলোর মধ্যে কিছু জর্ডানের আকাশসীমায় প্রতিহত করার চেষ্টা করা হয়েছে।

ইসরায়েল এখনো আনুষ্ঠানিক ক্ষয়ক্ষতি জানায়নি

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এখনো হামলার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি। তবে পর্যবেক্ষক মহল মনে করছে, হায়ফা ও তেলআবিবের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

যুদ্ধের প্রেক্ষাপট

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা বাড়তে থাকে গত সপ্তাহে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলার জেরে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইরান পাল্টা প্রতিশোধমূলক অভিযানে নামে।

মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই পাল্টাপাল্টি হামলা বৃহত্তর সংঘাতে রূপ নিতে পারে। বিশেষ করে হিজবুল্লাহ, হামাস ও হুতি যোদ্ধারা সরাসরি ইরানের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে জড়ালে এর পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

সারসংক্ষেপ:

• ইরানের টানা দ্বিতীয় দিনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

• হায়ফা শহরে সরাসরি মিসাইল আঘাত

• তেলআবিবে আতঙ্ক, আকাশে মিসাইলের ঝাঁক

• আইডিএফ জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছে

• জর্ডানের আম্মানেও বিস্ফোরণের শব্দ

• ইসরায়েল এখনো ক্ষয়ক্ষতি জানায়নি

মধ্যপ্রাচ্যে এ উত্তেজনা দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের ইঙ্গিত দিচ্ছে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেন যথাসম্ভব নিরাপদে থাকেন—এই মুহূর্তে এটাই প্রধান প্রার্থনা।