প্রবাস বুলেটিন ডেস্ক | ২৪ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণার পরও থামেনি ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা। সোমবার (২৩ জুন) রাতেই ট্রাম্প জানান, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে এবং তিনি উভয় পক্ষকে যুদ্ধবিরতি মেনে চলার আহ্বান জানান। তবে তার এই ঘোষণার মাত্র ঘণ্টাখানেক আগেই ইরান থেকে ইসরাইলের তেলআবিব ও বিরসেবা শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। এতে ইসরায়েলের চার নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির ন্যাশনাল অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস।
ট্রাম্প নিজের মালিকানাধীন সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ পোস্ট করে লেখেন, “যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। দয়া করে কেউ যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করবেন না।”
সংঘাতের ১২তম দিনে এসে এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসে। তবে যুদ্ধের ময়দানে বাস্তবতা ভিন্ন। ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর দাবি, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ইরানের পক্ষ থেকে ছয় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা এসএনএন জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার ঠিক আগে তেহরান সর্বশেষ হামলাটি চালায়। অন্যদিকে ইরানি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, সোমবার রাতভর ইসরাইল ইরানের বিভিন্ন অঞ্চলে হামলা চালিয়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি প্রাণহানিও ঘটেছে। এমনকি এই হামলায় আরও একজন ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন বলে তারা দাবি করেছে।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠার মূল কারণ হিসেবে উভয় পক্ষই পরস্পরকে দায়ী করছে। ইরানের দাবি, ইসরাইলের আগ্রাসনের জবাবে তারা মঙ্গলবার সকালে প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়।
হোয়াইট হাউসের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ট্রাম্প ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং যুদ্ধবিরতির বিষয়ে মধ্যস্থতা করেছেন। নেতানিয়াহু সেসময় বলেন, “যতক্ষণ না ইরান নতুন করে হামলা চালায়, ততক্ষণ ইসরাইল যুদ্ধবিরতি বজায় রাখবে।”
অন্যদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরগাচি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ইসরাইল হামলা বন্ধ না করলে যুদ্ধবিরতির প্রশ্নই আসে না। তিনি সাবেক টুইটার, বর্তমানে সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ এক পোস্টে লেখেন, “আমাদের সামরিক অভিযান বন্ধের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, এই সংঘাত ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন, যদি যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবারও পূর্ণমাত্রায় সংঘর্ষ শুরু হয়, তবে তা গোটা মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।
সূত্র: রয়টার্স, এসএনএন, ট্রুথ সোশ্যাল
