ঢাকা, ২৮ জুন ২০২৫:
বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর ব্যবহার করে ৯ ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত। গতকাল শুক্রবার ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএফটি) জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব পণ্য বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ভারতের স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করা যাবে না। তবে বিকল্প হিসেবে সমুদ্রপথে মুম্বাইয়ের নভা শেভা (Nhava Sheva) বন্দর ব্যবহার করে এই পণ্য আমদানি চালু থাকবে।
নিষিদ্ধ করা ৯টি পণ্যের মধ্যে রয়েছে:
-
কাঁচা পাট
-
পাটের রোল
-
পাটের সুতা
-
বিশেষ ধরনের পাটজাত কাপড়
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এই ৯ ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়েছে প্রায় ১৪ কোটি ৯৪ লাখ ডলার বা ১,৬৪৫ কোটি টাকা মূল্যের। এর মধ্যে স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়েছে ১৪ কোটি ৭৭ লাখ ডলারের পণ্য, অর্থাৎ প্রায় ৯৯ শতাংশই স্থলপথে গেছে।
তৃতীয় দফায় নিষেধাজ্ঞা
গত তিন মাসে এটি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের তৃতীয় দফার বাণিজ্যিক বিধিনিষেধ।
-
এর আগে, ১৭ মে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক সামগ্রী, কাঠের আসবাবপত্র, সুতা ও ফলভিত্তিক কোমল পানীয়সহ বেশ কিছু পণ্যের আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করে ভারত।
-
এরও আগে, ৯ এপ্রিল বাংলাদেশি পণ্যের জন্য কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে রপ্তানির সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়।
তবে, সর্বশেষ ঘোষণায় নেপাল ও ভুটানগামী ট্রানজিট পণ্যের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ, বাংলাদেশের ওই ৯ ধরনের পণ্য ভারত হয়ে নেপাল বা ভুটানে যেতে পারবে।
বিশ্লেষণ ও প্রভাব
বাণিজ্য বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ভারতীয় বাজারে বাংলাদেশের পাট ও পাটজাত পণ্যের প্রবেশে এই নিষেধাজ্ঞা বড় ধরনের আঘাত হানবে। কারণ এসব পণ্যের একটি বৃহৎ অংশ পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর শিল্পখাতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে এবং তা মূলত স্থলপথেই যায়।
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের উদ্যোগ চলমান থাকলেও একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে নতুন চ্যালেঞ্জে ফেলতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।
