নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৩ আগস্ট ২০২৫
চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিউ)-এর বৃত্তি পাওয়া ১৭১ জন ফিলিস্তিনি ছাত্রীকে বাংলাদেশে আনার প্রক্রিয়া হঠাৎ করেই থমকে গেছে। প্রায় দেড় বছর আগে গাজার মেধাবী ছাত্রীদের জন্য ঘোষণা করা এই বৃত্তির আওতায় বাংলাদেশ সরকার গত বছরের অক্টোবরে ১৮৯ জনকে ‘অন অ্যারাইভাল ভিসা’ দেওয়ার অনুমতি দিয়েছিল। তবে চলতি বছরের জুনে চট্টগ্রামের পুলিশ প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।
নিখোঁজ ও নিহতের শঙ্কা
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ভিসা প্রদানের বিলম্বে বৃত্তিপ্রাপ্ত অন্তত ৩০ ছাত্রীর খোঁজ মিলছে না। ধারণা করা হচ্ছে, ইসরায়েলের হামলায় তারা নিহত হয়েছেন অথবা অন্যত্র চলে গেছেন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নতুন করে ১৭১ জনের জন্য ভিসার আবেদন করেছে, যার মধ্যে অন্তত ১৩০ ছাত্রী চট্টগ্রামে আসার অপেক্ষায় আছেন।
দূতাবাসগুলোর অবস্থান
ফিলিস্তিনের ঢাকা দূতাবাস জানিয়েছে, তাদের সরকারের নীতি অনুযায়ী কেবল শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন সেই তালিকায় না থাকায় তারা এ বিষয়ে সম্মতি দিচ্ছে না। অন্যদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) শুরু থেকেই এই উদ্যোগে সহায়তা দিয়ে আসছে এবং জর্ডান থেকে বিশেষ ফ্লাইটে ছাত্রীদের আনতে প্রস্তুত রয়েছে।
নেপথ্যের বাধা
কূটনৈতিক মহলের দাবি, গত বছর অক্টোবরে অনুমতি দেওয়ার পর থেকেই একটি মহল সরকারি বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করে এইউডব্লিউ-তে ফিলিস্তিনি ছাত্রীদের পড়াশোনার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তাদের মতে, শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়াশোনা করতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রশ্ন
এইউডব্লিউ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও কামাল আহমেদ বলেন, অতীতে আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইয়েমেনসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশে আনার সময় সংশ্লিষ্ট সরকারের অনুমতি নেওয়া হয়নি। ফিলিস্তিনের ক্ষেত্রে কেন ব্যতিক্রম করা হচ্ছে, তা তিনি বুঝতে পারছেন না।
অপেক্ষা ও অনিশ্চয়তা
এখনও ভিসা অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা ছাত্রী ও তাদের পরিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছে। গাজার চলমান সহিংসতার মধ্যে প্রতিটি বিলম্বিত দিন তাদের ভবিষ্যৎকে আরও অনিশ্চিত করে তুলছে।
একজন ছাত্রী মর্মস্পর্শী বার্তায় লিখেছেন, “আমরা বাংলাদেশে এসে পড়াশোনা করতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। এখনো কি আশা আছে?