প্রকাশিত: সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশি পণ্যে আরোপিত মার্কিন শুল্ক আরও হ্রাস পাবে এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডেন লিঞ্চের নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।
আলোচনার মূল বিষয়সমূহ
-
যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা, সয়াবিনসহ কৃষিপণ্য আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
-
জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, বিশেষ করে এলপিজি আমদানি ও বেসামরিক বিমান কেনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
-
মাদক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও রোহিঙ্গা মানবিক সংকট সমাধানে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়েও দুই পক্ষ মতবিনিময় করেছে।
-
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়নে কৌশলগত পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, গত ৩১ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রপ্তানিপণ্যের ওপর শুল্কহার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করেছে, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় মাইলফলক। এ জন্য তিনি মার্কিন প্রতিনিধিদলকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের স্বার্থের ঘনিষ্ঠ মিল রয়েছে। প্রক্রিয়াটি আরও সহজ ও আশাব্যঞ্জক হয়ে উঠেছে। অচিরেই দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলে আমরা আশাবাদী।”
শ্রম মান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ১১ দফা ‘বাংলাদেশ লেবার অ্যাকশন প্ল্যান’ বাস্তবায়নে সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি আন্তর্জাতিক শ্রমমান ও ন্যায্য অনুশীলন রক্ষায় বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিও পুনর্ব্যক্ত করেন।
এ ছাড়া স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং স্বল্প সুদে ঋণপ্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন অধ্যাপক ইউনূস।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া
ব্রেন্ডেন লিঞ্চ বাংলাদেশের গঠনমূলক অবস্থানের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যঘাটতি একতরফাভাবে কমানোর প্রস্তাব দেওয়ার ফলেই আলোচনার প্রক্রিয়া সহজ হয় এবং ইতিবাচক ফলাফল এসেছে।
শুল্ক চুক্তি ও আমদানি প্রতিশ্রুতিগুলো সময়মতো বাস্তবায়নের গুরুত্বও তিনি উল্লেখ করেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, টেকসই উন্নয়নবিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মুরশেদ, বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান, ইউএসটিআরের দক্ষিণ এশিয়া–বিষয়ক পরিচালক এমিলি অ্যাশবি এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন।