সোমবার, ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে এবং ভবিষ্যতে বিতর্কিত কোনো ব্যক্তি যেন প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ না পান, সে লক্ষ্যে বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছে বিএনপি। দলের পক্ষ থেকে আপিল বিভাগের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ দুই থেকে তিনজন বিচারপতির মধ্য থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পক্ষে মত দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলজি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে তৃতীয় দফার সংলাপে অংশ নিয়ে বিএনপি এসব প্রস্তাব দেয়। সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও মনির হায়দার। বিএনপির পক্ষে সংলাপে নেতৃত্ব দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে প্রস্তাব
বিএনপির মতে, শুধু জ্যেষ্ঠতা নয়, উপযুক্ততা বিবেচনায় এনে প্রধান বিচারপতি নির্বাচন হওয়া উচিত। সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “রাষ্ট্রের স্বার্থে বিকল্প অপশন থাকা প্রয়োজন। ভবিষ্যতে বিচার বিভাগ যাতে বিতর্কিত চরিত্রের কারও হাতে না পড়ে, সে জন্য সিনিয়র বিচারপতিদের মধ্য থেকে নির্বাচন করার সুযোগ রাখা উচিত।”

সংবিধান সংস্কারে বিএনপির অবস্থান
বিএনপি রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠনের প্রস্তাবও দিয়েছে। এ বিষয়ে দলটি উচ্চ কক্ষের নাম ‘সিনেট’ এবং নিম্ন কক্ষের নাম ‘জাতীয় সংসদ’ রাখতে সম্মত হয়েছে। পাশাপাশি নারীদের জন্য ১০০ আসন সংরক্ষণের প্রস্তাবেও একমত হয়েছে বিএনপি, তবে এই আসনগুলোর নির্বাচনী পদ্ধতি নিয়ে দলের ভিন্নমত রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদসংক্রান্ত প্রস্তাবে বিএনপি মত দিয়েছে যে, একজন ব্যক্তি বিরতি দিয়ে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন। তবে সরকারের প্রধান এবং দলের প্রধান একই ব্যক্তি না হওয়ার কমিশনের প্রস্তাবে ভিন্নমত পোষণ করে বিএনপি জানিয়েছে, এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলের স্বাধীনতা থাকা উচিত।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন ব্যবস্থা
বিএনপি ১৪ সদস্যবিশিষ্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রস্তাবকে সমর্থন দিয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করলে উপদেষ্টামণ্ডলীর মধ্য থেকে একজনকে মনোনীত করা হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না রাখার প্রস্তাবেও দলটি একমত পোষণ করেছে।

মানবাধিকার ও শৃঙ্খলা বাহিনী প্রসঙ্গে অবস্থান
শৃঙ্খলা বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়েও আলোচনা হয়। বিএনপির মতে, সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত বাহিনীগুলোর বিষয়টি গভীরভাবে বিবেচনা করা উচিত যাতে ভারসাম্য রক্ষা করা যায়।

জাতীয় ঐকমত্যের দিকে অগ্রগতি
সংলাপে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আমরা অনেক জায়গায় ঐকমত্যে পৌঁছেছি। মতপার্থক্য থাকা স্বাভাবিক। বিএনপির প্রস্তাবগুলো সংশ্লিষ্ট কমিশনে পাঠানো হবে এবং আলোচনা অব্যাহত থাকবে।”

উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ থেকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংলাপ শুরু করে এবং আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে এই সংলাপ শেষ হবে বলে জানানো হয়েছে।

Leave A Reply

বৈদেশিক কর্মসংস্থান, অভিবাস ও প্রবাস জীবন সংক্রান্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল।

যোগাযোগ

সিটি হার্ট শপিং কমপ্লেক্স (১১তম ফ্লো), রুম ১২/৮, ৬৭, নয়াপল্টন, ভিআইপি রোড, ঢাকা-১০০০, ফোন: +৮৮০ ১৫৩৩-১৯০৩৭১, ইমেইল: info@probashbulletin.com

Exit mobile version