শুক্রবার, ৩রা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

স্টাফ রিপোর্টার, প্রবাস বুলেটিন

রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (মিটফোর্ড) সামনে পাথর ও ইট দিয়ে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় এজাহারভুক্ত ৬ নম্বর আসামি নান্নু কাজীকে (৩৩) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১।

র‌্যাবের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামে তার মামার বাড়ির পাশের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব-১১ এর সিপিসি-১ কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম গণমাধ্যমকে জানান, নান্নু কাজী ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজে হত্যাকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণকারীদের অন্যতম ছিলেন। ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি ইট ও সিমেন্টের ব্লক দিয়ে আঘাত করে সোহাগের মৃত্যু নিশ্চিত করেন। গ্রেপ্তারের পর রাতেই নান্নুকে র‌্যাব-১০ এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ নিয়ে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডে এখন পর্যন্ত মোট আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে গত রবিবার ঢাকা ও নেত্রকোণা থেকে সজীব ও রাজীব নামে আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালতের অনুমতি নিয়ে তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

কী ঘটেছিল সেই দিন?

গত ১০ জুলাই (বুধবার) বিকেলে মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনের ব্যস্ত সড়কে সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পূর্বপরিচয়ের সূত্র ধরে পুরান ঢাকার কয়েকজন যুবক সোহাগকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তাকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে এবং ইট-পাথরের টুকরা দিয়ে আঘাত করে শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে ফেলা হয়। হত্যার একপর্যায়ে তাকে বিবস্ত্র করা হয় এবং শরীরের ওপর লাফিয়ে আঘাত করে একাধিক হামলাকারী।

নিহত সোহাগ পুরান ঢাকার একটি এলাকায় ভাঙারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি পুরোনো তামার তার, অ্যালুমিনিয়াম শিটসহ বিভিন্ন পুনর্ব্যবহারযোগ্য জিনিসপত্রের ব্যবসা করতেন।

রাজনৈতিক সংযোগ ও পারিবারিক প্রেক্ষাপট

নিহতের পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, সোহাগ একসময় যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলায়। তিনি দুই সন্তানের জনক—১৪ বছর বয়সী মেয়ে সোহানা ষষ্ঠ শ্রেণিতে এবং ১১ বছর বয়সী ছেলে সোহান চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে।

ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার নিহতের বড় বোন মঞ্জুয়ারা বেগম ঢাকা কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

তদন্ত চলছে

নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় র‌্যাব-পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

Leave A Reply

বৈদেশিক কর্মসংস্থান, অভিবাস ও প্রবাস জীবন সংক্রান্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল।

যোগাযোগ

সিটি হার্ট শপিং কমপ্লেক্স (১১তম ফ্লো), রুম ১২/৮, ৬৭, নয়াপল্টন, ভিআইপি রোড, ঢাকা-১০০০, ফোন: +৮৮০ ১৫৩৩-১৯০৩৭১, ইমেইল: info@probashbulletin.com

Exit mobile version